যৌথ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকের এই সভাটি অত্যন্ত মূল্যবান ও তাৎপর্যপূর্ণ সভা বলে আমি মনে করি। এজন্য যে, হাজার হাজার ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে যে নতুন একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত এবং ফ্যাসিবাদ মুক্ত একটা আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার, সেখানে আবার নতুন করে একটা কালো ছায়া এসে দাঁড়াচ্ছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়া, জনগণকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এবং ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, বিভাজনের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে। এখানে গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনগুলোকে পরস্পরের মুখোমুখি করার একটা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু করা হয়েছে। কিছু মানুষ সরকারের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।’
ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ওপরে সবসময় গুরু দায়িত্ব এসে পড়েছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার। বাংলাদেশকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার। সেই দায়িত্ব হচ্ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, খালেদা জিয়া যে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার কাজ করতে শুরু করেছিলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতনভাবে তাদেরকে কাজ করতে হবে এবং রুখে দাঁড়াতে হবে যেকোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে।’ তিনি বলেন, ‘অনুরোধ করব সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে, আমরা যেন এই বিষয়গুলো মনে রাখি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেন কেউ কখনো কেড়ে নিতে না পারে, সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করতে না পারে। গণতন্ত্রকে আর কেউ যেন কখনো ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার দিয়ে দাবিয়ে রাখতে না পারে।’
জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনকর্ম তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৫ বছর ধরে একটা ফ্যাসিস্ট শাসনের মধ্যে রেখেছিল। যারা এখনো ষড়যন্ত্র করে চলেছে। সীমান্তের ওপার থেকে বাংলাদেশকে আবারো জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য, বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরকম সময়ে আমাদেরকে জিয়াউর রহমানের নাম বার বার মনে রাখতে হবে, স্মরণ করতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, প্রায় ১৭ শ’ নেতাকর্মীকে অ্যানফোর্স ডিজএপিয়ারেন্সের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।