ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৪১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / ৭৪ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি দলীয় লোগো

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের জন্য আগামী জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দিলে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। গত সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এখনই সরকারকে চাপে ফেলার অবস্থানে যেতে চায় না বিএনপি হাইকমান্ড। কারণ এই সরকারকে প্রথম দিন থেকেই সর্মথন ও সহযোগিতা করে আসছে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকেও বিএনপি নির্বাচনের আয়োজনের জন্য যৌক্তিক সময় দেয়ার কথা বলে আসছে। তবে সরকারকেও জনগণের মনোভাব বুঝতে হবে। তারা কী চায়? সংস্কার নিয়ে সরকার সময়ক্ষেপন করে চলছে। গত ১৫ মের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন বলছে, আলোচনা চলতে থাকবে। সরকার যদি না বোঝে তাহলে হয়তো ঈদের পর জুন-জুলাইয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেবে হাইকমান্ড। চলমান কর্মসূচির সাথে রাজপথের কঠোর কর্মসূচি যোগ হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, ইতোমধ্যে বিএনপির দুই কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে রয়েছে। যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল- এই তিন সংগঠনের সারাদেশে তারুণ্য সমাবেশ ও বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ চলবে। এছাড়া আগামী ২৫ মে থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন কর্মসূচি শুরু হবে। এসব কর্মসূচি চলবে। এরপর জুনের প্রথমেই কোরবানির ঈদ রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আরো পদক্ষেপ নেবে বিএনপি। বিশেষ করে যুগপৎ আন্দোলনের ঐক্য আরো সূদৃঢ় করতে পদক্ষেপ নেবে স্থায়ী কমিটি। কারণ ইতোমধ্যে দুই-তিনটি বিষয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। এটা আর সামনের দিকে এগোতে দিতে চায় না বিএনপির হাইকমান্ড।

চট্টগ্রাম বন্দর সরকার বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার নিয়ে সবর্ত্র আলোচনা হচ্ছে- এই বিষয়ে বৈঠকে তোলেন একজন সদস্য। তখন আলোচনায় অংশ নিয়ে আরেকজন সদস্য বলেন, এটা তো একটা অন্তর্বর্তী সরকার। তারা একদিকে মানবিক করিডর দিচ্ছে অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার স্বপ্ন দেখছে। এমনকি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করছে না। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের হাতে দিলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। তাই সরকারের উচিত হবে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা।

এদিকে, মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি প্রণয়নে যৌথসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার, জনগণকে তার অধিকার ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা শুরু হয়েছে।’

বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী ও মহল। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় দিকে শুরু হয়ে শেষ হয় ১১টার দিকে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস (ভার্চুয়ালি), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ভার্চুয়ালি), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান (ভার্চুয়ালি) ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (ভার্চুয়ালি), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (ভার্চুয়ালি) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

নয়া দিগন্ত

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি

আপডেট সময় ১২:৪১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের জন্য আগামী জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিএনপি। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দিলে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। গত সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এখনই সরকারকে চাপে ফেলার অবস্থানে যেতে চায় না বিএনপি হাইকমান্ড। কারণ এই সরকারকে প্রথম দিন থেকেই সর্মথন ও সহযোগিতা করে আসছে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকেও বিএনপি নির্বাচনের আয়োজনের জন্য যৌক্তিক সময় দেয়ার কথা বলে আসছে। তবে সরকারকেও জনগণের মনোভাব বুঝতে হবে। তারা কী চায়? সংস্কার নিয়ে সরকার সময়ক্ষেপন করে চলছে। গত ১৫ মের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন বলছে, আলোচনা চলতে থাকবে। সরকার যদি না বোঝে তাহলে হয়তো ঈদের পর জুন-জুলাইয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেবে হাইকমান্ড। চলমান কর্মসূচির সাথে রাজপথের কঠোর কর্মসূচি যোগ হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, ইতোমধ্যে বিএনপির দুই কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে রয়েছে। যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল- এই তিন সংগঠনের সারাদেশে তারুণ্য সমাবেশ ও বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ চলবে। এছাড়া আগামী ২৫ মে থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন কর্মসূচি শুরু হবে। এসব কর্মসূচি চলবে। এরপর জুনের প্রথমেই কোরবানির ঈদ রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আরো পদক্ষেপ নেবে বিএনপি। বিশেষ করে যুগপৎ আন্দোলনের ঐক্য আরো সূদৃঢ় করতে পদক্ষেপ নেবে স্থায়ী কমিটি। কারণ ইতোমধ্যে দুই-তিনটি বিষয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে। এটা আর সামনের দিকে এগোতে দিতে চায় না বিএনপির হাইকমান্ড।

চট্টগ্রাম বন্দর সরকার বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার নিয়ে সবর্ত্র আলোচনা হচ্ছে- এই বিষয়ে বৈঠকে তোলেন একজন সদস্য। তখন আলোচনায় অংশ নিয়ে আরেকজন সদস্য বলেন, এটা তো একটা অন্তর্বর্তী সরকার। তারা একদিকে মানবিক করিডর দিচ্ছে অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার স্বপ্ন দেখছে। এমনকি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করছে না। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের হাতে দিলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। তাই সরকারের উচিত হবে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা।

এদিকে, মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি প্রণয়নে যৌথসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার, জনগণকে তার অধিকার ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা শুরু হয়েছে।’

বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী ও মহল। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় দিকে শুরু হয়ে শেষ হয় ১১টার দিকে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস (ভার্চুয়ালি), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ভার্চুয়ালি), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান (ভার্চুয়ালি) ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (ভার্চুয়ালি), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (ভার্চুয়ালি) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

নয়া দিগন্ত