ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তায় ভিপিপ্রার্থী সানজিদা সাবরিনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ঘোষণা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০১:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৭১ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদপ্রার্থী সানজিদা সাবরিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের  ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। 

লিগ্যাল সাপোর্ট  ডেস্ক স্থাপন সম্পর্কে সানজিদা সাবরিন বলেন, আমি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে হলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ Legal Support Desk প্রতিষ্ঠা করবো। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক বিরোধ, সম্পত্তি-সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা সাইবার নিরাপত্তাজনিত সমস্যার প্রাথমিক আইনগত পরামর্শ পাবেন। পাশাপাশি, প্রয়োজন হলে আদালতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা এবং সরকারি লিগ্যাল এইড অফিসের সেবার সাথে শিক্ষার্থীদের কার্যকর সংযোগ স্থাপন নিশ্চিত করা হবে। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তি সহজতর করবে।

সানজিদার নির্বাচনী স্লোগান হলো, “পূর্বের কাজ দেখেই প্রার্থী বাছাই করুন, আশার বাণী তো সবাই ই শোনায়”। দায়িত্ব, স্বচ্ছতা ও সমাধানের নিরবিচ্ছিন্ন প্রয়াসের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তার ১২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন: 

১। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণই হবে অগ্রাধিকার:

হল প্রতিনিধি থাকাকালীন রুমের সিলিং ফ্যান সংক্রান্ত আবেদন আমি নিজ হাতে জমা দিয়েছি। এটি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই হবে আমার প্রথম কাজ।

২। স্বচ্ছ সিট বণ্টন ও স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন:

সিট বণ্টন হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, মেধা ও প্রয়োজনভিত্তিক। রুমে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী কমিয়ে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করব।

৩। বিনামূল্যে বেড এক্সটেনশন:

বেড এক্সটেনশনে যেন কোন শিক্ষার্থীর টাকা খরচ করতে না হয় সেই লক্ষ্যে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করব।

৪। ক্যান্টিনের পরিবেশ ও খাবারের মান উন্নয়ন:

ক্যান্টিনের পরিবেশ সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও খাবাবের মান উন্নয়নে ক্যান্টিন মালিকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো। কোনো অনিয়ম কিংবা দুর্ব্যবহার হলে সেই ক্যান্টিন মালিকের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া নিশ্চিত করা হবে।

৫। রিডিং রুমে ফ্রি ওয়াই-ফাই:

পড়াশোনার পরিবেশ আধুনিকায়নে রিডিং রুমে নিরবিচ্ছিন্ন ফ্রি ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে।

৬। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন:

হল রুটে বড় বাস সংযোজন, ট্রিপ বাড়ানো এবং বাস চালকদের আচরণে শালীনতা নিশ্চিত করা হবে।

৭। সন্ধ্যায় নিরাপদে চলাচল:

নিউমার্কেট থেকে হল পর্যন্ত পথকে নারীবান্ধব ও নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করব।

৮। জরুরি পরিসেবা ও পরিবারের সহজ প্রবেশাধিকার:

প্রভোস্ট, হাউস টিউটর, ডাক্তার, প্লাম্বার ও অন্যান্য স্টাফ যেন দ্রুত পাওয়া যায় এটি নিশ্চিত করব। এবং জরুরি অবস্থায় কোন শিক্ষার্থীর মা কিংবা বোন যেন হলে অবস্থান করতে পারে সেই ব্যবস্থা করব।

৯।  রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা ও জিমনেশিয়ামে আধুনিক সরঞ্জাম:

হলে ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা করব এবং জিমনেসিয়ামে নতুন ইকুইপমেন্ট সংযোজনের জন্য জোরালো দাবি উত্থাপন করব।

১০। গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ হল সংসদ:

প্রতিটি সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং প্রতিটি কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যেকোনো সংকটকালে ছাত্রসমাজের পক্ষে সংগঠিত সহায়তা নিশ্চিত করব।

১১।শিক্ষাজীবন সমাপ্তি পর্যন্ত হলে অবস্থান নিশ্চিতকরণ:

মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী যেন হলে অবস্থান করতে পারে সেই অধিকার নিশ্চিত করবো।

১২।অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে অস্থায়ী অবস্থানের সুযোগ

 অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের  প্রয়োজনবোধে বৈধ পরিচয়পত্র বা কার্ড প্রদর্শন করা সাপেক্ষে হলে অবস্থান করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণমূলক কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন সানজিদা সাবরিন। প্রতিনিধি থাকাকালীন নিজের উদ্যোগগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন-

১. নিচতলার রিডিং রুমে পর্যাপ্ত পর্দা ছিল না। একদিন এক আপু বিষয়টি জানালে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে এগিয়ে যাই। বাকি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে দরখাস্ত দেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিচতলা ও উপরতলার রিডিং রুম এবং নামাজ কক্ষের পর্দা নতুন করে পরিবর্তন করা হয়। একই সঙ্গে পানির ফিল্টার সংলগ্ন স্থানে পার্টিশনের ব্যবস্থা নিয়েছিলাম যাতে পাঠরতদের মনোযোগ ব্যাহত না হয়।

২. লিফট তৃতীয় তলায় থামত না। প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ছিল আমাদের প্রথম সাফল্য—ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবিটি পূরণ করতে সক্ষম হই।

৩. বেড এক্সটেনশনের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রভোস্ট ম্যামের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে তাঁকে রাজি করাই। এটি সহজ কাজ ছিল না। তবে অবশেষে ম্যামের নির্দেশে আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে মাপজোক করে কাঠমিস্ত্রির মাধ্যমে এক্সটেনশন কার্যক্রম শুরু হয়।

৪. চার ও ছয় তলায় নতুন ফিল্টারের দাবিতে নিজ হাতে আবেদন লিখে জমা দিই। শুধু আবেদন নয়—বারবার অনুস্মারক, ফোন কল ও তাগাদার পর অবশেষে এই দাবিও পূর্ণ হয়। এজন্য মাঝে মধ্যে বকাও খেতে হয়েছে।

৫. ক্যান্টিন ও বিপণি সংক্রান্ত অভিযোগ সমাধানে আমি নিয়মিত সক্রিয় থেকেছি। ক্যান্টিন তদারকি কমিটিতে কাজ করেছি এবং অবশেষে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান—মান্নান নামক স্বৈরাচার ক্যান্টিন মালিককে বিদায় জানাতে সক্ষম হই।

৬. হলের নিয়মে কার্ড জমা দেওয়ার পর মায়েরা বা বোনেরা এক ঘণ্টার জন্য প্রবেশের অনুমতি পান—এটি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিই।

৭. ট্রলি ব্যবহারে বিশৃঙ্খলা থাকায় আমরা একটি খাতা মেইনটেইনের ব্যবস্থা করি যাতে সময়মতো ট্রলি পাওয়া যায়।

৮. দ্বিতীয় তলায় আবাসিক শিক্ষকের রুমকে গণরুমে রূপান্তরের দাবি জানাই, যাতে নতুন ছাত্রীদের সিটের সংকট কমে। এই দাবির প্রেক্ষিতেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

৯. স্টাফদের অমার্জিত আচরণের বিষয়ে, বারবার প্রভোস্ট ম্যামের সঙ্গে কথা বলেছি।

১০. জিমনেশিয়ামের আবেদনসহ ফাহিমা ম্যামের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি কাজে আমি নিজে উপস্থিত থেকেছি।

১১. সিলিং ফ্যান ও তিনতলার কাঁচি গেট খোলার দাবিতে আবেদন জমা দিয়েছিলাম।

তার ব্যাপারে আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আয়েশা তারান্নুম প্রিয়ন্তী বলেন, “হলে ভিপি পদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি তাকেই যোগ্য মনে করি, যার হল সংস্কার কার্যক্রমে অবশ্যই কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ও অবদান আছে। এক্ষেত্রে আমার পছন্দের তালিকায় সানজিদা সাবরিন সবার শীর্ষে। কারণ ইতিপূর্বে সে হল প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে হলের বেশ কিছু অতীব জরুরি কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বছরের পর বছর ধরে চলমান ভোগান্তি গুলো প্রশাসনের সাথে কথা বলে মাত্র অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে সমাধান করেছে। আমার চোখে এই হলের সবচেয়ে যোগ্য ভিপি পদের প্রার্থী সানজিদা সাবরিন।”
বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মুনিরা ফেরদৌসী বলেন, “কোনো কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকেই কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। কাজের আগ্রহ থেকেই মূলত যেকোনো সমস্যা সমাধানের পথ আলোর মুখ দেখে। হল সংসদের ভিপির আসন তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ। এক্ষেত্রে আসন্ন ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনে ভিপি পদপ্রার্থী হিসেবে সানজিদা সাবরিনকে পছন্দ করি আমি। কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকে পূর্বে হল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে সে। বহুবার প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থীদের দাবী নিয়ে যেকোনো সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান সে করেছে। যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ভিপি পদে তাই আমি তার প্রতিই আস্থা স্থাপন করছি।”

সানজিদা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি সবসময়ই আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আপনাদের পাশে থেকেছি। সামনের দিনগুলোতেও আরেকবার সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও ভালোবাসা দিয়ে আপনাদের সেবা করে যাবো, ইন শা আল্লাহ্।

নিউজটি শেয়ার করুন

নারী শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তায় ভিপিপ্রার্থী সানজিদা সাবরিনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ঘোষণা

আপডেট সময় ১২:০১:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদপ্রার্থী সানজিদা সাবরিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের  ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। 

লিগ্যাল সাপোর্ট  ডেস্ক স্থাপন সম্পর্কে সানজিদা সাবরিন বলেন, আমি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে হলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ Legal Support Desk প্রতিষ্ঠা করবো। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক বিরোধ, সম্পত্তি-সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা সাইবার নিরাপত্তাজনিত সমস্যার প্রাথমিক আইনগত পরামর্শ পাবেন। পাশাপাশি, প্রয়োজন হলে আদালতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা এবং সরকারি লিগ্যাল এইড অফিসের সেবার সাথে শিক্ষার্থীদের কার্যকর সংযোগ স্থাপন নিশ্চিত করা হবে। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তি সহজতর করবে।

সানজিদার নির্বাচনী স্লোগান হলো, “পূর্বের কাজ দেখেই প্রার্থী বাছাই করুন, আশার বাণী তো সবাই ই শোনায়”। দায়িত্ব, স্বচ্ছতা ও সমাধানের নিরবিচ্ছিন্ন প্রয়াসের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তার ১২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন: 

১। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণই হবে অগ্রাধিকার:

হল প্রতিনিধি থাকাকালীন রুমের সিলিং ফ্যান সংক্রান্ত আবেদন আমি নিজ হাতে জমা দিয়েছি। এটি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই হবে আমার প্রথম কাজ।

২। স্বচ্ছ সিট বণ্টন ও স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন:

সিট বণ্টন হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, মেধা ও প্রয়োজনভিত্তিক। রুমে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী কমিয়ে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করব।

৩। বিনামূল্যে বেড এক্সটেনশন:

বেড এক্সটেনশনে যেন কোন শিক্ষার্থীর টাকা খরচ করতে না হয় সেই লক্ষ্যে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করব।

৪। ক্যান্টিনের পরিবেশ ও খাবারের মান উন্নয়ন:

ক্যান্টিনের পরিবেশ সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও খাবাবের মান উন্নয়নে ক্যান্টিন মালিকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো। কোনো অনিয়ম কিংবা দুর্ব্যবহার হলে সেই ক্যান্টিন মালিকের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া নিশ্চিত করা হবে।

৫। রিডিং রুমে ফ্রি ওয়াই-ফাই:

পড়াশোনার পরিবেশ আধুনিকায়নে রিডিং রুমে নিরবিচ্ছিন্ন ফ্রি ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে।

৬। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন:

হল রুটে বড় বাস সংযোজন, ট্রিপ বাড়ানো এবং বাস চালকদের আচরণে শালীনতা নিশ্চিত করা হবে।

৭। সন্ধ্যায় নিরাপদে চলাচল:

নিউমার্কেট থেকে হল পর্যন্ত পথকে নারীবান্ধব ও নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করব।

৮। জরুরি পরিসেবা ও পরিবারের সহজ প্রবেশাধিকার:

প্রভোস্ট, হাউস টিউটর, ডাক্তার, প্লাম্বার ও অন্যান্য স্টাফ যেন দ্রুত পাওয়া যায় এটি নিশ্চিত করব। এবং জরুরি অবস্থায় কোন শিক্ষার্থীর মা কিংবা বোন যেন হলে অবস্থান করতে পারে সেই ব্যবস্থা করব।

৯।  রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা ও জিমনেশিয়ামে আধুনিক সরঞ্জাম:

হলে ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা করব এবং জিমনেসিয়ামে নতুন ইকুইপমেন্ট সংযোজনের জন্য জোরালো দাবি উত্থাপন করব।

১০। গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ হল সংসদ:

প্রতিটি সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং প্রতিটি কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যেকোনো সংকটকালে ছাত্রসমাজের পক্ষে সংগঠিত সহায়তা নিশ্চিত করব।

১১।শিক্ষাজীবন সমাপ্তি পর্যন্ত হলে অবস্থান নিশ্চিতকরণ:

মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী যেন হলে অবস্থান করতে পারে সেই অধিকার নিশ্চিত করবো।

১২।অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে অস্থায়ী অবস্থানের সুযোগ

 অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের  প্রয়োজনবোধে বৈধ পরিচয়পত্র বা কার্ড প্রদর্শন করা সাপেক্ষে হলে অবস্থান করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণমূলক কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন সানজিদা সাবরিন। প্রতিনিধি থাকাকালীন নিজের উদ্যোগগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন-

১. নিচতলার রিডিং রুমে পর্যাপ্ত পর্দা ছিল না। একদিন এক আপু বিষয়টি জানালে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে এগিয়ে যাই। বাকি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে দরখাস্ত দেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিচতলা ও উপরতলার রিডিং রুম এবং নামাজ কক্ষের পর্দা নতুন করে পরিবর্তন করা হয়। একই সঙ্গে পানির ফিল্টার সংলগ্ন স্থানে পার্টিশনের ব্যবস্থা নিয়েছিলাম যাতে পাঠরতদের মনোযোগ ব্যাহত না হয়।

২. লিফট তৃতীয় তলায় থামত না। প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ছিল আমাদের প্রথম সাফল্য—ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবিটি পূরণ করতে সক্ষম হই।

৩. বেড এক্সটেনশনের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রভোস্ট ম্যামের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে তাঁকে রাজি করাই। এটি সহজ কাজ ছিল না। তবে অবশেষে ম্যামের নির্দেশে আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে মাপজোক করে কাঠমিস্ত্রির মাধ্যমে এক্সটেনশন কার্যক্রম শুরু হয়।

৪. চার ও ছয় তলায় নতুন ফিল্টারের দাবিতে নিজ হাতে আবেদন লিখে জমা দিই। শুধু আবেদন নয়—বারবার অনুস্মারক, ফোন কল ও তাগাদার পর অবশেষে এই দাবিও পূর্ণ হয়। এজন্য মাঝে মধ্যে বকাও খেতে হয়েছে।

৫. ক্যান্টিন ও বিপণি সংক্রান্ত অভিযোগ সমাধানে আমি নিয়মিত সক্রিয় থেকেছি। ক্যান্টিন তদারকি কমিটিতে কাজ করেছি এবং অবশেষে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান—মান্নান নামক স্বৈরাচার ক্যান্টিন মালিককে বিদায় জানাতে সক্ষম হই।

৬. হলের নিয়মে কার্ড জমা দেওয়ার পর মায়েরা বা বোনেরা এক ঘণ্টার জন্য প্রবেশের অনুমতি পান—এটি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিই।

৭. ট্রলি ব্যবহারে বিশৃঙ্খলা থাকায় আমরা একটি খাতা মেইনটেইনের ব্যবস্থা করি যাতে সময়মতো ট্রলি পাওয়া যায়।

৮. দ্বিতীয় তলায় আবাসিক শিক্ষকের রুমকে গণরুমে রূপান্তরের দাবি জানাই, যাতে নতুন ছাত্রীদের সিটের সংকট কমে। এই দাবির প্রেক্ষিতেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

৯. স্টাফদের অমার্জিত আচরণের বিষয়ে, বারবার প্রভোস্ট ম্যামের সঙ্গে কথা বলেছি।

১০. জিমনেশিয়ামের আবেদনসহ ফাহিমা ম্যামের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি কাজে আমি নিজে উপস্থিত থেকেছি।

১১. সিলিং ফ্যান ও তিনতলার কাঁচি গেট খোলার দাবিতে আবেদন জমা দিয়েছিলাম।

তার ব্যাপারে আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আয়েশা তারান্নুম প্রিয়ন্তী বলেন, “হলে ভিপি পদের প্রতিনিধি হিসেবে আমি তাকেই যোগ্য মনে করি, যার হল সংস্কার কার্যক্রমে অবশ্যই কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ও অবদান আছে। এক্ষেত্রে আমার পছন্দের তালিকায় সানজিদা সাবরিন সবার শীর্ষে। কারণ ইতিপূর্বে সে হল প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে হলের বেশ কিছু অতীব জরুরি কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বছরের পর বছর ধরে চলমান ভোগান্তি গুলো প্রশাসনের সাথে কথা বলে মাত্র অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে সমাধান করেছে। আমার চোখে এই হলের সবচেয়ে যোগ্য ভিপি পদের প্রার্থী সানজিদা সাবরিন।”
বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মুনিরা ফেরদৌসী বলেন, “কোনো কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকেই কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। কাজের আগ্রহ থেকেই মূলত যেকোনো সমস্যা সমাধানের পথ আলোর মুখ দেখে। হল সংসদের ভিপির আসন তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ। এক্ষেত্রে আসন্ন ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনে ভিপি পদপ্রার্থী হিসেবে সানজিদা সাবরিনকে পছন্দ করি আমি। কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকে পূর্বে হল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে সে। বহুবার প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থীদের দাবী নিয়ে যেকোনো সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান সে করেছে। যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ভিপি পদে তাই আমি তার প্রতিই আস্থা স্থাপন করছি।”

সানজিদা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি সবসময়ই আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আপনাদের পাশে থেকেছি। সামনের দিনগুলোতেও আরেকবার সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও ভালোবাসা দিয়ে আপনাদের সেবা করে যাবো, ইন শা আল্লাহ্।