ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
জোটের বাইরে ১১৭ আসনে বিএনপির ১৯০ প্রার্থী

জোট শরিকদের ১৫ আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ০৭:৩১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ১১৭টিতে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৯০ বিএনপির নেতা। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে জমা পড়া মনোনয়নপত্র বিশ্লেষণ করে বিষয়টি জানা যায়। এর মধ্যে বিএনপির সাথে নির্বাচনী জোটে থাকা শরিক দলগুলোর সাথে সমঝোতা হওয়া ১৫টি আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। এছাড়া কিছু আসনে কৌশলগত কারণে বিএনপি নিজেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে জামায়াত নেতারা শরিকদেকে নিজেদের আসন ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াচ্ছেন। অপরপক্ষে বিএনপি নেতাদের বিপরীতমূখী কর্মকান্ডে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন সমালোচকরা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। গতকাল রাতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৩০০ সংসদীয় আসনে মোট ২ হাজার ৫৮২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। সে হিসাবে প্রতিটি আসনে গড়ে ৮টির বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, যেসব আসনে প্রার্থীদের খেলাপি ঋণ, শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত সমস্যা রয়েছে, সেগুলোতে ঝুঁকি এড়াতে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মূল প্রার্থী অযোগ্য হলে বিকল্পকে চূড়ান্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আবার গুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এটি নির্বাচনী কৌশলের অংশ।

প্রস্তুত রাখা বিকল্প প্রার্থীরা হলেন, ফেনী-১ আসনে রফিকুল আলম (মজনু), বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ আলম ও দিনাজপুর-৩ আসনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) খন্দকার মারুফ হোসেন, বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনে কবির আহমেদ ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, সুনামগঞ্জ-২ আসনে (দিরাই ও শাল্লা) যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহির রায়হান চৌধুরীকে (পাভেল), মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ।
এসব বিকল্প প্রার্থীর বাইরেও দলীয় নির্দেশনার বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিএনপি নেতারা। এ তালিকায় রয়েছেন একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাও।

শরিকদের আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনাদের সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতা হয়েছে এবং মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, এমন আসনগুলোতেও বিএনপির নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এমনকি এ তালিকায় রয়েছে বিএপির কেন্দ্রীয় নেতা সহ হেভিওয়েট নেতারাও।

ঢাকা-১২ আসনে বিএনপি গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হককে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম (নীরব) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভোলা-১ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে প্রার্থী করা হয়েছে। সেখানে বিএনপির নেতা গোলাম নবী আলমগীরও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিএনপির পাঁচজন স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হককে দেওয়া পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ উবায়দুল্লাহ ফারুককে ছেড়ে দেওয়া সিলেট-৫ আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশিদও প্রার্থী হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীবকে দিয়েছে বিএনপি। মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে দেওয়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

বাংলাদেশ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাছকে ছেড়ে দেওয়া যশোর-৫ আসনেও বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সৈয়দ এহসানুল হুদা। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলার সভাপতি শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল প্রার্থী হয়েছেন।

একইভাবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার জন্য গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন দল ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপি তাঁকে মনোনয়ন দিলেও সেখানে দলটির আরেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ববি হাজ্জাজকে দেওয়া ঢাকা-১৩, জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে দেওয়া নীলফামারী-১ ও শাহাদাত হোসেন সেলিমকে দেওয়া লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।

গুম হওয়ার ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম (তুলি) ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী। সেখানে বিএনপির নেতা এস এ সিদ্দিক সাজু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক) আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কুড়িগ্রাম–৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আবদুল খালেক, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এমএ হান্নান, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুস সাত্তার খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ারের ছেলে কাজী তাপস, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে করিম সরকার, ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে বিএনপি নেতা মামুন বিন আবদুল মান্নান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ইতোমধ্যে ৯ জনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জোটের বাইরে ১১৭ আসনে বিএনপির ১৯০ প্রার্থী

জোট শরিকদের ১৫ আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতারা

আপডেট সময় ০৭:৩১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ১১৭টিতে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৯০ বিএনপির নেতা। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে জমা পড়া মনোনয়নপত্র বিশ্লেষণ করে বিষয়টি জানা যায়। এর মধ্যে বিএনপির সাথে নির্বাচনী জোটে থাকা শরিক দলগুলোর সাথে সমঝোতা হওয়া ১৫টি আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। এছাড়া কিছু আসনে কৌশলগত কারণে বিএনপি নিজেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে জামায়াত নেতারা শরিকদেকে নিজেদের আসন ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াচ্ছেন। অপরপক্ষে বিএনপি নেতাদের বিপরীতমূখী কর্মকান্ডে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন সমালোচকরা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। গতকাল রাতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৩০০ সংসদীয় আসনে মোট ২ হাজার ৫৮২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। সে হিসাবে প্রতিটি আসনে গড়ে ৮টির বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, যেসব আসনে প্রার্থীদের খেলাপি ঋণ, শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত সমস্যা রয়েছে, সেগুলোতে ঝুঁকি এড়াতে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মূল প্রার্থী অযোগ্য হলে বিকল্পকে চূড়ান্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আবার গুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এটি নির্বাচনী কৌশলের অংশ।

প্রস্তুত রাখা বিকল্প প্রার্থীরা হলেন, ফেনী-১ আসনে রফিকুল আলম (মজনু), বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ আলম ও দিনাজপুর-৩ আসনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) খন্দকার মারুফ হোসেন, বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনে কবির আহমেদ ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, সুনামগঞ্জ-২ আসনে (দিরাই ও শাল্লা) যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহির রায়হান চৌধুরীকে (পাভেল), মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ।
এসব বিকল্প প্রার্থীর বাইরেও দলীয় নির্দেশনার বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিএনপি নেতারা। এ তালিকায় রয়েছেন একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাও।

শরিকদের আসনেও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনাদের সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতা হয়েছে এবং মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, এমন আসনগুলোতেও বিএনপির নেতারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এমনকি এ তালিকায় রয়েছে বিএপির কেন্দ্রীয় নেতা সহ হেভিওয়েট নেতারাও।

ঢাকা-১২ আসনে বিএনপি গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হককে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম (নীরব) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভোলা-১ আসনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে প্রার্থী করা হয়েছে। সেখানে বিএনপির নেতা গোলাম নবী আলমগীরও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিএনপির পাঁচজন স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হককে দেওয়া পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ উবায়দুল্লাহ ফারুককে ছেড়ে দেওয়া সিলেট-৫ আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশিদও প্রার্থী হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীবকে দিয়েছে বিএনপি। মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে দেওয়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

বাংলাদেশ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাছকে ছেড়ে দেওয়া যশোর-৫ আসনেও বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সৈয়দ এহসানুল হুদা। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলার সভাপতি শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল প্রার্থী হয়েছেন।

একইভাবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার জন্য গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন দল ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপি তাঁকে মনোনয়ন দিলেও সেখানে দলটির আরেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ববি হাজ্জাজকে দেওয়া ঢাকা-১৩, জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে দেওয়া নীলফামারী-১ ও শাহাদাত হোসেন সেলিমকে দেওয়া লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি।

গুম হওয়ার ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম (তুলি) ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী। সেখানে বিএনপির নেতা এস এ সিদ্দিক সাজু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক) আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কুড়িগ্রাম–৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আবদুল খালেক, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এমএ হান্নান, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুস সাত্তার খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ারের ছেলে কাজী তাপস, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে করিম সরকার, ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে বিএনপি নেতা মামুন বিন আবদুল মান্নান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ইতোমধ্যে ৯ জনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।