ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হরতালের ঘোষণা দিল জামায়াত ইসলামী

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৯:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৮১ বার পড়া হয়েছে

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির পর এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী রোববার (১৯ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কর্ম সূচির ঘোষণা করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিরোধীদল ও দেশবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনধিকৃত ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেছে। সমগ্র জাতি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল তথাকথিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফরমায়েশি তপশিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, বিরোধীদলের মতামত অগ্রাহ্য করে ঘোষিত তথাকথিত তপশিল দেশকে অস্থিতিশীল ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে। সংলাপের পথ রুদ্ধ করবে। রাজনীতিতে ঘোর অমানিশা নেমে আসবে। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।’

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গণতন্ত্রের লেবাসধারী সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সরকার নাগরিকদের ভোট দিতে দেয়নি। সাজানো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। জামায়াতসহ বিরোধীদলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের বহু শীর্ষ নেতাকে জেলে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। বিরোধীদলের অসংখ্য নেতাকর্মী এখনও বন্দি। মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে। সরকারিদল সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও বিরোধীদলকে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস দেওয়া হচ্ছে না। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। লেভেল প্লেইং ফিল্ড এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের সকল শীর্ষ নেতা এবং গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশ ও মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। জামায়াতের তালাবদ্ধ কেন্দ্রীয় অফিসসহ বন্ধ সকল শাখা অফিস খুলে দিতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিরোধীদলগুলো এখনও আন্দোলন করছে। দেশি-বিদেশি মহল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি দল সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না। আওয়ামী সরকার গোয়ার্তুমি করছে এবং ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের দিকেই হাঁটছে। বিদগ্ধ মহল কমিশনের তপশিল ঘোষণাকে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসী মনে করে, ষড়যন্ত্রমূলক নীল-নকশার তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন মূলত বিরোধীদলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে অতীতের মত শাসকদলকে জিতিয়ে আনার কৌশল নিয়েছে। গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনতা সরকারের বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন পূরণ হতে দেবে না। জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কমিশনকে অবশ্যই এ তপশিল প্রত্যাহার করতে হবে। সকল দলের মধ্যে ঐকমত্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত করে কমিশনকে নতুনভাবে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করতে হবে। আমি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের গণতন্ত্র হত্যার ফরমায়েশি তপশিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারা দেশে আগামী ১৯ নভেম্বর রোববার ভোর ৬টা থেকে ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

হরতালের ঘোষণা দিল জামায়াত ইসলামী

আপডেট সময় ০৯:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির পর এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী রোববার (১৯ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কর্ম সূচির ঘোষণা করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিরোধীদল ও দেশবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনধিকৃত ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেছে। সমগ্র জাতি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল তথাকথিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফরমায়েশি তপশিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, বিরোধীদলের মতামত অগ্রাহ্য করে ঘোষিত তথাকথিত তপশিল দেশকে অস্থিতিশীল ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে। সংলাপের পথ রুদ্ধ করবে। রাজনীতিতে ঘোর অমানিশা নেমে আসবে। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।’

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গণতন্ত্রের লেবাসধারী সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সরকার নাগরিকদের ভোট দিতে দেয়নি। সাজানো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। জামায়াতসহ বিরোধীদলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের বহু শীর্ষ নেতাকে জেলে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। বিরোধীদলের অসংখ্য নেতাকর্মী এখনও বন্দি। মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে। সরকারিদল সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও বিরোধীদলকে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস দেওয়া হচ্ছে না। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। লেভেল প্লেইং ফিল্ড এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধীদলের সকল শীর্ষ নেতা এবং গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশ ও মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। জামায়াতের তালাবদ্ধ কেন্দ্রীয় অফিসসহ বন্ধ সকল শাখা অফিস খুলে দিতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিরোধীদলগুলো এখনও আন্দোলন করছে। দেশি-বিদেশি মহল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি দল সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না। আওয়ামী সরকার গোয়ার্তুমি করছে এবং ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের দিকেই হাঁটছে। বিদগ্ধ মহল কমিশনের তপশিল ঘোষণাকে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ মনে করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসী মনে করে, ষড়যন্ত্রমূলক নীল-নকশার তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন মূলত বিরোধীদলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে অতীতের মত শাসকদলকে জিতিয়ে আনার কৌশল নিয়েছে। গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনতা সরকারের বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন পূরণ হতে দেবে না। জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কমিশনকে অবশ্যই এ তপশিল প্রত্যাহার করতে হবে। সকল দলের মধ্যে ঐকমত্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত করে কমিশনকে নতুনভাবে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করতে হবে। আমি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের গণতন্ত্র হত্যার ফরমায়েশি তপশিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারা দেশে আগামী ১৯ নভেম্বর রোববার ভোর ৬টা থেকে ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি। ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’