গত ৯ বছরে আগুনে ১০৫১ জনের মৃত্যু,আহত ৩৬০৬
- আপডেট সময় ০৭:৫৩:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
- / ১৬৭ বার পড়া হয়েছে
সারা দেশে গত ৯ বছরে এক লাখ ৯০ হাজার ১৬৭টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। এতে এক হাজার ৫১ জন নিহত হয়। আহত হয়েছে তিন হাজার ৬০৬ জন।
ফায়ার সার্ভিসের গত ৯ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে ১৭ হাজার ৪৮৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এই অগ্নিকাণ্ডে ২১৬ জন আহত ও ৬৮ জন নিহত হয়। এতে ৮৫৬ কোটি ৯৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৮৬ টাকার ক্ষতি হয়। ২০১৬ সালের ১৬ হাজার ৮৫৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৪৭ জন আহত ও ৫২ জন নিহত হয়। এতে ২৪০ কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ৮২২ টাকার ক্ষতি হয়। ২০১৭ সালের ১৮ হাজার ১০৫টি অগ্নিকাণ্ডে ২৬৯ জন আহত ও ৪৫ জন নিহত হয়।এতে ক্ষতি হয়েছে ২৫৭ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮৬ টাকার।
২০১৮ সালে ১৯ হাজার ৬৪২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৬৪ জন আহত ও ১৩০ জন নিহত হয়েছে। এতে ৩৮৫ কোটি ৭৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৫ টাকার ক্ষতি হয়। ২০১৯ সালে ২৪ হাজার ৭৪টি অগ্নিকাণ্ডে ৫৬০ জন আহত ও ১৮৪ জন নিহত হয়। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩৩০ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৪ টাকার। ২০২০ সালে ২১ হাজার ৭৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩৮৬ জন আহত ও ১৫৪ জন নিহত হয়। এতে ২৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪৪ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
২০২১ সালে ২১ হাজার ৬০১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫৭৬ জন আহত ও ২১৯ জন নিহত হয়। এ সময় ক্ষতি হয়েছে ২১৮ কোটি ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ টাকার। ২০২২ সালে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নিকাণ্ডে আহত হয় ৪০৭ জন, নিহত হন ৯৭ জন। সে বছর আগুনে ক্ষয়ক্ষতি হয় ৩৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৯ টাকার। ২০২৩ সালে দেশে ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাণ্ডে সারা দেশে ২৮১ জন আহত ও ১০২ জন নিহত হয়। এই অগ্নিকাণ্ডে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়।
বড় আগুনে যত মৃত্যু : চুড়িহাট্টা
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় আগুনে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এতে আহত হয় কয়েক শ মানুষ। চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর পার হয়েছে। এখনো অনেক বাসার নিচে কেমিক্যালের গুদামও রয়েছে, দেদার চলছে ব্যবসা।
এফআর টাওয়ার ট্র্যাজেডি
বনানীর বহুতল বাণ্যিজিক ভবন এফআর টাওয়ারে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে লাগা আগুনে ২৭ জনের মত্যু হয়, আহত হয় শতাধিক। ২২ তলা ওই ভবনের অষ্টম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।
মগবাজারের বিস্ফোরণ
২০২১ সালের ২৭ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার ‘রাখি নীড়’ নামের একটি ভবনের নিচতলায় আগুনে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় দুই শতাধিক ব্যক্তি। ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলেছেন, শর্মা হাউস নামে ফুডশপে গ্যাস জমে ভবনে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের কথা বলেছেন। তবে ওই ঘটনার প্রায় তিন বছর হয়ে এলেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি।
বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেটে আগুন
২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভোরে রাজধানীর বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের পাশাপাশি আরো চারটি মার্কেটে আগুন লাগে। এতে তিন হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী সর্বস্ব হারিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০৫ কোটি টাকার।
একই বছরের ১৫ এপ্রিল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ২২৬টি দোকান পুড়ে গেছে। মার্কেটের মালিক সমিতির ভাষ্য মতে, আগুনে ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বেইলি রোড ট্র্যাজেডি
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। আগুনের সূত্রপাত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পুরোপুরি তথ্য কোনো সংস্থা এখনো না দিতে পারলেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভবনটির নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না এ বিষয়ে। যদিও সিআইডি বলছে, কেমিক্যাল পরীক্ষা করে উদঘাটন করা হবে দুর্ঘটনার পেছনের কারণ।
২০২৩ সালে ফায়ার সার্ভিস তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশে আগুন লাগার বড় কারণ বৈদ্যুতিক গোলযোগ। ২০২২ সালের অগ্নিদুর্ঘটনার ৩৮ শতাংশই হয়েছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে। দ্বিতীয় বড় কারণ বিড়ি ও সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা। ২০২২ সালে ১৬ শতাংশের কিছু বেশি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে এ কারণে। প্রায় ১৪ শতাংশ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে চুলা থেকে। সেটি বৈদ্যুতিক, গ্যাস বা মাটির চুলা হতে পারে। ৩ শতাংশের কিছু বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে গ্যাস সরবরাহ লাইন থেকে।