বাবার মরদেহে আটকে রেখে সম্পদ ভাগাভাগি, ৯ ঘণ্টা পর দাফন
নিউজ ডেস্ক:-
- আপডেট সময় ০২:৫১:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
- / ২৮১ বার পড়া হয়েছে
জীবদ্দশায় সব কষ্ট উপেক্ষা করে সন্তানদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য নিরলস পরিশ্রম করেন বাবা। সেই বাবার মৃত্যুর পর মরদেহ দাফনের বদলে উঠানে রেখে সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধে জড়ালো যশোরের ঝিকরগাছার ১০ ভাই বোন। সর্বশেষ সালিশে সুষ্ঠু বণ্টনের আশ্বাসে ৯ ঘণ্টা পর দাফন সম্পন্ন হয় আব্দুল মজিদ নামে ওই বাবার।
শুক্রবার (৮ মার্চ) নজিরবিহীন এ ঘটনাটি ঘটে ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে।
ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সদস্য গোলাম রসুল জানান, শুক্রবার বেলা ১১টায় মারা যান বিষ্ণুপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রীসহ, ৭ ছেলে, ৩ কন্যা রেখে গেছেন; আর রেখে গেছেন ৪৫ বিঘা জমি। তাকে দাফন করার জন্য যখন প্রতিবেশী ও স্বজনরা ব্যস্ত তখন তিন সন্তান অভিযোগ করেন, তাদের অপর তিন ভাই আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সামাদ ও আসাদুজ্জামান বাবা আব্দুল মজিদকে বিভিন্ন কথা বলে ৫ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন।
অভিযোগকারী সন্তান আব্দুল মান্নান, আব্দুল হাকিম, আব্দুস সালাম ও আব্দুল আহাদ আরও দাবি করেন, ওই তিন ভাই বাবার জমি বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জমি এবং টাকার সঠিক হিসাব না হওয়া পর্যন্ত বাবার মরদেহ দাফন হবে না।
এ বিষয়ে ছেলে আব্দুল আহাদ বলেন, বাবা দীর্ঘদিন ধরে স্ট্রোকে ভুগছিলেন। এই সুযোগে তার তিন ভাই আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সামাদ ও আসাদুজ্জামান বাবার কাছ থেকে প্রত্যেকে এক বিঘা করে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। আমরা জানার পর জমি ফেরত দেয়ার কথা বললেও তারা জমি ফেরত দেননি। এজন্য বিষয়টি আজকেই সমাধান হতে হবে। বাবার সম্পত্তির সবাই সমান ভাগিদার। তারা কেন বেশি নেবেন?
একপর্যায়ে বিষয়টি গড়ায় শালিসে। বিকেলে মৃত আব্দুল মজিদের বাড়িতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বসে। পার্শ্ববর্তী মনিরামপুর উপজেলার হরিহরনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, প্রকৌশলী আব্দুস ছাত্তার খা, মিজানুর রহমান, সোহরাব হোসেন, ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম, ইউপি সদস্য গোলাম রসুল, ইউপি সদস্য এরশাদ আলী, মহিলা ইউপি সদস্য রেহেনা খাতুন, সাবেক ইউপি সদস্য আবু সামা, সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান বৈঠকে ৭ ভাই ও তিন বোনকে ডেকে বাবার সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করার আশ্বাস দেন।
সবাই এ সিদ্ধান্তে সম্মতি প্রকাশ করলে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর এবং ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা খুব দ্রুতই ১০ ভাই বোনকে সমানভাবে জমি বণ্টন করে দেবেন। আর যাদের নামে বেশি জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে তারা অন্য ভাইদের জমি ফেরত দেবেন।
এরপর প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাতে দাফন সম্পন্ন হয় আব্দুল মজিদের। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ট্যাগস :
যশোর