ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫১:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
  • / ২২৩ বার পড়া হয়েছে

ইতিহাস গড়ার নিমিত্তেই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। উদ্দেশ্য ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া। তবে সেই স্বাদ মিলিয়ে যায় দ্বিতীয় ইনিংসের পাওয়ার প্লেতেই, স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন করে তুলেন নুয়ান তুষারা।

যদিও রিশাদ হোসেনের কল্যাণে পরে দুঃস্বপ্ন ভেঙে বাস্তবতায় ফিরে বাংলাদেশ, তবে ততক্ষণে খুব বেশিই দেরি হয়ে গেছে। আট নম্বরে নেমে তার করা ঝড়ো ফিফটি কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। বাকিরা যেখানে পাড়ি দিতে পারেনি ২০ রানের গণ্ডি, রিশাদ সেখানে করেন ৩০ বলে ৫৩ রান।

শনিবার (৯ মার্চ) সিলেটে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। যেখানে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৯.৪ ওভারে ১৪৬ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। ২৮ রানের জয় দিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় লঙ্কান সিংহরা।

জয়ের ইতিহাস গড়তে নেমে লজ্জার ইতিহাস গড়তে বসেছিল বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৪ রানের মাঝেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। ৮.২ ওভারে যা পরিণড হয় ৩২/৬। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহের শঙ্কা দেখা দেয় টাইগারদের। ভর করে বিকেলের বিষণ্ণতা।

তবে এই শঙ্কা কাটিয়ে তুলে রিশাদ-মেহেদি জুটি। কার্যত মেহেদীকেই শেষ স্বীকৃত ব্যাটার ধরা হলেও এদিন তাকেই দর্শক বানিয়ে দেন রিশাদ। একপ্রান্তে তাকে দাঁড় করিয়ে রেখে ছক্কার ফুলঝুরি ছুটান রিশাদ। মেহেদী ২০ বলে ১৯ করে আউট হলেও থামেনি তার ঝড়, একটা সময় মাত্র ২৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।

যদিও এরপর রিশাদের ইনিংস আর বড় হয়নি, ১৬.৫ ওভারে থিকসানার শিকার হন তিনি। তবে এবার ঝড় তুলেন তাসকিন। তিনিও খেলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটাই। শেষ ওভারে আউট হন ২১ বলে ৩১ করে।

একটা সময়ে শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ২৯ রান। তবে এই সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি তাসকিন-মোস্তাফিজ জুটি। এতো ভালো ইনিংসের পরও তাই তাসকিন-রিশাদ আক্ষেপ করে বলতেই পারেন, টপ অর্ডার যদি কয়েকটা রান করে যেতো!

রান হয়তো হতো, যদি নুয়ান তুষারা বাধা হয়ে না দাঁড়াতেন। চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই নাজমুল হোসেন শান্তের স্ট্যাম্প উগড়ে দেন নুয়ান। ৬ বলে ১ করে বাংলাদেশ অধিনায়ক ধরেন সাজঘরের পথ। চার নম্বরে মাঠে এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই স্ট্যাম্প ভাঙে তাওহীদ হৃদয়েরও। গোল্ডেন ডাক উপহার দেন তিনি।

তাতেই জেগে উঠে হ্যাটট্রিকের শঙ্কা। সেই শঙ্কা বাস্তবে পরিণত করতে সময় নেননি নুয়ান, পরের বলেই ফেরান মাহমুদউল্লাহকে। ৪ বলের মাঝে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে কার্যত বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন নুয়ান। দুর্দশা পিছু ছাড়েনি এরপরেও। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা সৌম্য সরকারও পারেননি দলের বিপর্যয়ে ভরসা হতে।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এই নুয়ানের শিকার হয়েই ফেরেন তিনি। ১০ বলে ১১ রান আসে তার ব্যাটে। দুই ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এই লঙ্কান পেসার। আর শেষ দিকে শরিফুলকে ফিরিয়ে পূরণ করেন ৫ উইকেটের মাইলফলক। খরচা করেন ২০ রান।

এর আগে তৃতীয় ওভারেই লিটন দাসকে ফেরান সিলভা। ১১ বলে ৭ রান করে আউট হন তিনি। আর ৮.১ ওভারে জাকির আলি ফেরেন ১৩ বলে ৪ করে, হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে। তাতেই মাত্র ৩২ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

অবশ্য ব্যাট হাতে লঙ্কানরাও তেমন সুবিধা করতে পারেনি এক কুশল মেন্ডিস ছাড়া। এই ব্যাটার খেলেন ৫৫ বলে ৮৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বাকিদের কেউ আবার পারেনি বিশ রানের গণ্ডি পাড়ি দিতে। ১৯ রান করেন দাসুন শানাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজ জেতা হলো না বাংলাদেশের

আপডেট সময় ০৯:৫১:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

ইতিহাস গড়ার নিমিত্তেই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। উদ্দেশ্য ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া। তবে সেই স্বাদ মিলিয়ে যায় দ্বিতীয় ইনিংসের পাওয়ার প্লেতেই, স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন করে তুলেন নুয়ান তুষারা।

যদিও রিশাদ হোসেনের কল্যাণে পরে দুঃস্বপ্ন ভেঙে বাস্তবতায় ফিরে বাংলাদেশ, তবে ততক্ষণে খুব বেশিই দেরি হয়ে গেছে। আট নম্বরে নেমে তার করা ঝড়ো ফিফটি কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। বাকিরা যেখানে পাড়ি দিতে পারেনি ২০ রানের গণ্ডি, রিশাদ সেখানে করেন ৩০ বলে ৫৩ রান।

শনিবার (৯ মার্চ) সিলেটে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। যেখানে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৯.৪ ওভারে ১৪৬ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। ২৮ রানের জয় দিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় লঙ্কান সিংহরা।

জয়ের ইতিহাস গড়তে নেমে লজ্জার ইতিহাস গড়তে বসেছিল বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৪ রানের মাঝেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। ৮.২ ওভারে যা পরিণড হয় ৩২/৬। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহের শঙ্কা দেখা দেয় টাইগারদের। ভর করে বিকেলের বিষণ্ণতা।

তবে এই শঙ্কা কাটিয়ে তুলে রিশাদ-মেহেদি জুটি। কার্যত মেহেদীকেই শেষ স্বীকৃত ব্যাটার ধরা হলেও এদিন তাকেই দর্শক বানিয়ে দেন রিশাদ। একপ্রান্তে তাকে দাঁড় করিয়ে রেখে ছক্কার ফুলঝুরি ছুটান রিশাদ। মেহেদী ২০ বলে ১৯ করে আউট হলেও থামেনি তার ঝড়, একটা সময় মাত্র ২৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।

যদিও এরপর রিশাদের ইনিংস আর বড় হয়নি, ১৬.৫ ওভারে থিকসানার শিকার হন তিনি। তবে এবার ঝড় তুলেন তাসকিন। তিনিও খেলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটাই। শেষ ওভারে আউট হন ২১ বলে ৩১ করে।

একটা সময়ে শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ২৯ রান। তবে এই সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি তাসকিন-মোস্তাফিজ জুটি। এতো ভালো ইনিংসের পরও তাই তাসকিন-রিশাদ আক্ষেপ করে বলতেই পারেন, টপ অর্ডার যদি কয়েকটা রান করে যেতো!

রান হয়তো হতো, যদি নুয়ান তুষারা বাধা হয়ে না দাঁড়াতেন। চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই নাজমুল হোসেন শান্তের স্ট্যাম্প উগড়ে দেন নুয়ান। ৬ বলে ১ করে বাংলাদেশ অধিনায়ক ধরেন সাজঘরের পথ। চার নম্বরে মাঠে এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই স্ট্যাম্প ভাঙে তাওহীদ হৃদয়েরও। গোল্ডেন ডাক উপহার দেন তিনি।

তাতেই জেগে উঠে হ্যাটট্রিকের শঙ্কা। সেই শঙ্কা বাস্তবে পরিণত করতে সময় নেননি নুয়ান, পরের বলেই ফেরান মাহমুদউল্লাহকে। ৪ বলের মাঝে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে কার্যত বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন নুয়ান। দুর্দশা পিছু ছাড়েনি এরপরেও। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা সৌম্য সরকারও পারেননি দলের বিপর্যয়ে ভরসা হতে।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এই নুয়ানের শিকার হয়েই ফেরেন তিনি। ১০ বলে ১১ রান আসে তার ব্যাটে। দুই ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এই লঙ্কান পেসার। আর শেষ দিকে শরিফুলকে ফিরিয়ে পূরণ করেন ৫ উইকেটের মাইলফলক। খরচা করেন ২০ রান।

এর আগে তৃতীয় ওভারেই লিটন দাসকে ফেরান সিলভা। ১১ বলে ৭ রান করে আউট হন তিনি। আর ৮.১ ওভারে জাকির আলি ফেরেন ১৩ বলে ৪ করে, হাসারাঙ্গার শিকার হয়ে। তাতেই মাত্র ৩২ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

অবশ্য ব্যাট হাতে লঙ্কানরাও তেমন সুবিধা করতে পারেনি এক কুশল মেন্ডিস ছাড়া। এই ব্যাটার খেলেন ৫৫ বলে ৮৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বাকিদের কেউ আবার পারেনি বিশ রানের গণ্ডি পাড়ি দিতে। ১৯ রান করেন দাসুন শানাকা।