ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেসিক ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: লা মেরিডিয়ানের মালিক কারাগারে

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৭:৩৭:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
  • / ১৪১ বার পড়া হয়েছে

বেসিক ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অর্থআত্মসাৎ মামলায় হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আমিন আহমেদ। শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবীঅ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।

২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ৫ জুন দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল হাসান গাজী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৫ জুলাই চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
 
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, বাচ্চুর ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ।
 
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৮ আগস্ট বেস্ট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদের সঙ্গে গুলশান সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অধীন ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার লালসরাইস্থিত মৌজার ৬ নং প্লটের ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি ক্রয়ের জন্য সমঝোতা চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন বাচ্চু। 
 
চুক্তি অনুযায়ী মূল্য ধরা হয় ১১০ কোটি টাকা। পরে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর দুটি দলিল মোতাবেক ভূমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মধ্যে ৮০৮৮৫ নং দলিলে ১৮ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৯ কোটি টাকা। এই দলিলের গ্রহীতারা হলেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না ও স্ত্রী মিসেস শিরিন আক্তার। অপরদিকে ৮০৮৮৬ নং দলিলে ১২ দশমিক ২৫ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
 
এই দলিলের গ্রহিতা আব্দুল হাই বাচ্চুর দুই ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই। তাই দুটি দলিলে জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য দাঁড়ায় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অথচ জমি ক্রয় বাবদ আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ১৩৪টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে সর্বমোট ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং নগদে ৩১ কোটি ৫০ লাখ, অর্থাৎ মোট ১১০ কোটি টাকা আসামি আমিন আহমেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধ করেন। যা আমিন আহমেদ বুঝে পেয়েছেন মর্মে স্বীকার করেন।
 
শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু তার স্ত্রী, ভাই ও সন্তানদের নামে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা হস্তান্তার, স্থানান্তর, রূপান্তর, ছদ্মাবরণের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অর্থ গোপন করেছেন। আর ১১০ কোটি টাকায় ক্রয় করার পরও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দলিল করে আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সরকারের ৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
 
আমিন আহমেদ আব্দুল হাই বাচ্চুর অবৈধ অর্থ বৈধতা প্রদানে সরাসরি সহায়তা করেছেন। এর মাধ্যমে আসামিরা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

বেসিক ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: লা মেরিডিয়ানের মালিক কারাগারে

আপডেট সময় ০৭:৩৭:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

বেসিক ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অর্থআত্মসাৎ মামলায় হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আমিন আহমেদ। শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবীঅ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।

২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নুরুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে ৫ জুন দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল হাসান গাজী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৫ জুলাই চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
 
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, বাচ্চুর ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদ।
 
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ৮ আগস্ট বেস্ট হোল্ডিংস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদের সঙ্গে গুলশান সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অধীন ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার লালসরাইস্থিত মৌজার ৬ নং প্লটের ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি ক্রয়ের জন্য সমঝোতা চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন বাচ্চু। 
 
চুক্তি অনুযায়ী মূল্য ধরা হয় ১১০ কোটি টাকা। পরে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর দুটি দলিল মোতাবেক ভূমির দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মধ্যে ৮০৮৮৫ নং দলিলে ১৮ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৯ কোটি টাকা। এই দলিলের গ্রহীতারা হলেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না ও স্ত্রী মিসেস শিরিন আক্তার। অপরদিকে ৮০৮৮৬ নং দলিলে ১২ দশমিক ২৫ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মূল্য ধরা হয় ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
 
এই দলিলের গ্রহিতা আব্দুল হাই বাচ্চুর দুই ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই। তাই দুটি দলিলে জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য দাঁড়ায় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অথচ জমি ক্রয় বাবদ আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ১৩৪টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে সর্বমোট ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং নগদে ৩১ কোটি ৫০ লাখ, অর্থাৎ মোট ১১০ কোটি টাকা আসামি আমিন আহমেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধ করেন। যা আমিন আহমেদ বুঝে পেয়েছেন মর্মে স্বীকার করেন।
 
শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু তার স্ত্রী, ভাই ও সন্তানদের নামে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা হস্তান্তার, স্থানান্তর, রূপান্তর, ছদ্মাবরণের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অর্থ গোপন করেছেন। আর ১১০ কোটি টাকায় ক্রয় করার পরও ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দলিল করে আসামি শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু সরকারের ৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
 
আমিন আহমেদ আব্দুল হাই বাচ্চুর অবৈধ অর্থ বৈধতা প্রদানে সরাসরি সহায়তা করেছেন। এর মাধ্যমে আসামিরা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।