ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলা ব্লকেডে মেট্রোরেলে উপচে পড়া ভিড়

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৭:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
  • / ৭৯ বার পড়া হয়েছে

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

তবে এই আন্দোলনের বাইরে ছিল মেট্রোরেল। গণপরিবহন না পেয়ে মেট্রোরেলেই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন সাধারণ যাত্রীরা। এর ফলে মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে যাত্রীর চাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

বুধবার (১০ জুলাই) তৃতীয় দফায় সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

তাই সকাল থেকেই মেট্রো স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এ সময় টিকিটের লম্বা লাইন সিঁড়ি পর্যন্ত চলে আসে। অনেকে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেও ভিড়ের কারণে ট্রেনে উঠতে পারেননি। তাতে প্ল্যাটফর্মেও বাড়তে থাকে ভিড়।
কারওয়ানবাজার থেকে মতিঝিল এসেছেন সোহেল খান। তিনি বলেন, ‘কারওয়ানবাজার এলাকায় অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছেন। কোনো গাড়ি যেতে দিচ্ছিল না। সে জন্য কারওয়ানবাজার থেকে মেট্রোরেলে মতিঝিলে এসেছি। সাড়ে ৫টায় কারওয়ানবাজার স্টেশনে এলেও টিকিট পেতে আমার ৪৫ মিনিট লেগেছে। লম্বা লাইন। কিছু করার নেই।’

মতিঝিলগামী আরেক যাত্রী উম্মে কুলসুম বলেন, ‘দুইটা ট্রেন মিস করেছি। পরে ট্রেনে কোনোমতে উঠে মতিঝিল এসেছি। ট্রেনের ভেতরে গায়ে গায়ে লাগা যাত্রী। ভীষণ চাপ ট্রেনের ভেতরে। কী-যে অবস্থা। আমি নিজেও ট্রেনের ভেতরে কোনোভাবে দাঁড়িয়েছিলাম, অনেক কষ্ট হয়েছে।’

শ্যামলীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইকবাল খন্দকার বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে ট্রেনের ভেতরে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। আমি প্রায়ই মেট্রোরেলে যাতায়াত করি। কিন্তু আজ বুঝতে পেরেছি মেট্রোরেলের ভিড় কাকে বলে। ৩টা ট্রেন মিস করে তারপর ট্রেনে উঠতে পেরেছি। আমার বাচ্চা রাগ করে আমাকে বলেছে, আব্বু আজ এত ভিড় কেন? চলো গাড়িতে যাই। তাকে তো বলতে পারছি না যে গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে আছে।’

কোটাবিরোধীরা বিকেলে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি আটকে থাকায় এখনও যানজট কমেনি। বিভিন্ন সড়কে লেগে আছে জ্যাম। তাই লোকজন এখনও মেট্রোতে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন কারওয়ানবাজার স্টেশনের বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর কবির।

এদিকে সর্বোচ্চ আদালত কোটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করলেও সংসদে আইন পাস করে সরকারি চাকরির কোটাব্যবস্থার ‘যৌক্তিক’ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
তাদের দাবি, শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে সব ধরনের কোটা বাতিল করতে হবে।
সন্ধ্যা ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলকারীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলা ব্লকেডে মেট্রোরেলে উপচে পড়া ভিড়

আপডেট সময় ০৭:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

তবে এই আন্দোলনের বাইরে ছিল মেট্রোরেল। গণপরিবহন না পেয়ে মেট্রোরেলেই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন সাধারণ যাত্রীরা। এর ফলে মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে যাত্রীর চাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

বুধবার (১০ জুলাই) তৃতীয় দফায় সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

তাই সকাল থেকেই মেট্রো স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এ সময় টিকিটের লম্বা লাইন সিঁড়ি পর্যন্ত চলে আসে। অনেকে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেও ভিড়ের কারণে ট্রেনে উঠতে পারেননি। তাতে প্ল্যাটফর্মেও বাড়তে থাকে ভিড়।
কারওয়ানবাজার থেকে মতিঝিল এসেছেন সোহেল খান। তিনি বলেন, ‘কারওয়ানবাজার এলাকায় অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছেন। কোনো গাড়ি যেতে দিচ্ছিল না। সে জন্য কারওয়ানবাজার থেকে মেট্রোরেলে মতিঝিলে এসেছি। সাড়ে ৫টায় কারওয়ানবাজার স্টেশনে এলেও টিকিট পেতে আমার ৪৫ মিনিট লেগেছে। লম্বা লাইন। কিছু করার নেই।’

মতিঝিলগামী আরেক যাত্রী উম্মে কুলসুম বলেন, ‘দুইটা ট্রেন মিস করেছি। পরে ট্রেনে কোনোমতে উঠে মতিঝিল এসেছি। ট্রেনের ভেতরে গায়ে গায়ে লাগা যাত্রী। ভীষণ চাপ ট্রেনের ভেতরে। কী-যে অবস্থা। আমি নিজেও ট্রেনের ভেতরে কোনোভাবে দাঁড়িয়েছিলাম, অনেক কষ্ট হয়েছে।’

শ্যামলীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইকবাল খন্দকার বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে ট্রেনের ভেতরে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। আমি প্রায়ই মেট্রোরেলে যাতায়াত করি। কিন্তু আজ বুঝতে পেরেছি মেট্রোরেলের ভিড় কাকে বলে। ৩টা ট্রেন মিস করে তারপর ট্রেনে উঠতে পেরেছি। আমার বাচ্চা রাগ করে আমাকে বলেছে, আব্বু আজ এত ভিড় কেন? চলো গাড়িতে যাই। তাকে তো বলতে পারছি না যে গাড়ির চাকা বন্ধ হয়ে আছে।’

কোটাবিরোধীরা বিকেলে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি আটকে থাকায় এখনও যানজট কমেনি। বিভিন্ন সড়কে লেগে আছে জ্যাম। তাই লোকজন এখনও মেট্রোতে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন কারওয়ানবাজার স্টেশনের বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর কবির।

এদিকে সর্বোচ্চ আদালত কোটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করলেও সংসদে আইন পাস করে সরকারি চাকরির কোটাব্যবস্থার ‘যৌক্তিক’ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
তাদের দাবি, শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে সব ধরনের কোটা বাতিল করতে হবে।
সন্ধ্যা ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলকারীরা।