ঢাকা ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবির রোকেয়া হল থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের পিটিয়ে হলছাড়া

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৩:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / ১১৮ বার পড়া হয়েছে

ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে ধরে বের করে দেয়া হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলকে সকল প্রকার রাজনীতিমুক্ত হল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই হল থেকে ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃক পিটিয়ে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

হল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ১০টায় প্রবেশের শেষ সময় থাকলেও ছাত্রলীগের নেত্রীরা নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে, শিক্ষার্থীরা মারমুখী হয়ে গেলে হাউজ টিউটররা তাদেরকে প্রটোকল দিয়ে কক্ষে পৌঁছিয়ে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে মারধর কক্ষ থেকে বের করে দেন।

বের করে দেওয়া দশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলেন- হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন, বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, সামিহা মাহবুব, সাজিয়া রহমান, বিপর্ণা রায় ও সাইফুন্নেসা ইলমি অন্যরা।

এদিকে, নেত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়ে প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে একটি লিখিত নিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে বলা হয়, আমরা রোকেয়া হলের মেয়েরা এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ থেকে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জাসদ, শিবির ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হলো। কোন ধরনের পলিটিকাল রুম বা গণরুম থাকবে না। কোন পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হলে হবে না। কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা হলের সাথে থাকবে না। আমরা হলের মেয়েরা যদি ওইসব দলের দ্বারা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে হল প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে এর দায় নিতে হবে। আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হলো।

এই বিষয়ে হলটির এক শিক্ষার্থী বলেন, রোকেয়া হল এখন শিক্ষার্থীদের দখলে। ছাত্রলীগের মেয়েদের বের করে দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনকে পিটিয়ে, চুল টেনে, মরিচের গুঁড়া চোখে দিয়ে ধাওয়া করেছে শিক্ষার্থীরা। হলের কর্মচারী দাদুরা তাকে প্রভোস্ট বাংলোর গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে তালা মেরে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেই গেটই ভাঙ্গার চেষ্টা করে।

ঘটনার শুরুর দিকে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের হলের শিক্ষার্থীদেরকে মূলত ১০টার পরে হলে ঢুকতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ম্যাডামরা ২০ থেকে ৩০ জন ছাত্রলীগকে প্রটোকল দিয়ে ১০টার পর ঢুকিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাই এ বিষয়টাকে অন্যভাবে নিয়েছে। ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। এজন্য শিক্ষার্থীরা এদেরকে হল থেকে বের করতে চাচ্ছে এবং স্লোগান দিচ্ছে।

ক্ষুব্ধ এক শিক্ষার্থীকে একটি অডিও বার্তায় বলতে শোনা যায়, ছাত্রলীগ অনিয়ম করে হলে ঢুকবে এবং ম্যামরা তাদেরকে সহযোগিতা করবে, এটা আমরা হতে দেব না। আমাদের ভাইদেরকে যারা রক্তাক্ত করে, আমাদের বোনদের গায়ে যারা হাত তোলে, তারা আমাদের ওপরের তলায় ঘুমাবে সেটা আমরা কখনোই মেনে নিতে রাজি না। আমরা ওদেরকে হল থেকে বিতাড়িত করেই ছাড়ব।

হলটির এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বার্তা পাঠিয়ে লেখেন, হলে ম্যামরা প্রটোকল দিয়ে ছাত্রলীগের মেয়েদের হলে ঢুকিয়েছে। সাধারণ মেয়েরা বলছে ওদের বের করতে হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিলুফার পারভীনকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাবির রোকেয়া হল থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের পিটিয়ে হলছাড়া

আপডেট সময় ০৩:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলকে সকল প্রকার রাজনীতিমুক্ত হল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই হল থেকে ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃক পিটিয়ে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

হল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ১০টায় প্রবেশের শেষ সময় থাকলেও ছাত্রলীগের নেত্রীরা নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে, শিক্ষার্থীরা মারমুখী হয়ে গেলে হাউজ টিউটররা তাদেরকে প্রটোকল দিয়ে কক্ষে পৌঁছিয়ে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে মারধর কক্ষ থেকে বের করে দেন।

বের করে দেওয়া দশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলেন- হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন, বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, সামিহা মাহবুব, সাজিয়া রহমান, বিপর্ণা রায় ও সাইফুন্নেসা ইলমি অন্যরা।

এদিকে, নেত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়ে প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে একটি লিখিত নিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে বলা হয়, আমরা রোকেয়া হলের মেয়েরা এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ থেকে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জাসদ, শিবির ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হলো। কোন ধরনের পলিটিকাল রুম বা গণরুম থাকবে না। কোন পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হলে হবে না। কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা হলের সাথে থাকবে না। আমরা হলের মেয়েরা যদি ওইসব দলের দ্বারা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে হল প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে এর দায় নিতে হবে। আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হলো।

এই বিষয়ে হলটির এক শিক্ষার্থী বলেন, রোকেয়া হল এখন শিক্ষার্থীদের দখলে। ছাত্রলীগের মেয়েদের বের করে দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনকে পিটিয়ে, চুল টেনে, মরিচের গুঁড়া চোখে দিয়ে ধাওয়া করেছে শিক্ষার্থীরা। হলের কর্মচারী দাদুরা তাকে প্রভোস্ট বাংলোর গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে তালা মেরে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেই গেটই ভাঙ্গার চেষ্টা করে।

ঘটনার শুরুর দিকে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের হলের শিক্ষার্থীদেরকে মূলত ১০টার পরে হলে ঢুকতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ম্যাডামরা ২০ থেকে ৩০ জন ছাত্রলীগকে প্রটোকল দিয়ে ১০টার পর ঢুকিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাই এ বিষয়টাকে অন্যভাবে নিয়েছে। ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। এজন্য শিক্ষার্থীরা এদেরকে হল থেকে বের করতে চাচ্ছে এবং স্লোগান দিচ্ছে।

ক্ষুব্ধ এক শিক্ষার্থীকে একটি অডিও বার্তায় বলতে শোনা যায়, ছাত্রলীগ অনিয়ম করে হলে ঢুকবে এবং ম্যামরা তাদেরকে সহযোগিতা করবে, এটা আমরা হতে দেব না। আমাদের ভাইদেরকে যারা রক্তাক্ত করে, আমাদের বোনদের গায়ে যারা হাত তোলে, তারা আমাদের ওপরের তলায় ঘুমাবে সেটা আমরা কখনোই মেনে নিতে রাজি না। আমরা ওদেরকে হল থেকে বিতাড়িত করেই ছাড়ব।

হলটির এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বার্তা পাঠিয়ে লেখেন, হলে ম্যামরা প্রটোকল দিয়ে ছাত্রলীগের মেয়েদের হলে ঢুকিয়েছে। সাধারণ মেয়েরা বলছে ওদের বের করতে হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিলুফার পারভীনকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।