ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুজবে ভরা ভারতীয় মিডিয়া, টিভি চ্যানেল নাকি সার্কাস?

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৮:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৬৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের ছাত্রজনতার গণঅভুথ্যানকে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বলে আখ্যায়িত করছে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের টিভি চ্যানেল রিপাবলিক বাংলা। স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরা এক ভিডিওতে দেখা যায় তিনি ক্যামেরার সামনেই অনেকটা উন্মাদের মতো লাফালাফি ও চিৎকার করে দাবি করছেন এই আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন নয়।  সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের একেক দিন দেয়া একেক বক্তব্যের সাথে তাল মিলিয়ে তাঁকে বলতে শুনা যায় যে এই আন্দোলন একটি মৌলবাদী আন্দোলন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পালিয়ে তিনি আশ্রয় নেন ভারতে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর কিছু সুযোগ সন্ধানী লোকেরা দেশের কিছু জায়গায় সনাতন ধর্মের লোক ও স্থাপনার উপর আক্রমণ করে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয় এমন প্রপাগান্ডা শুরু করে ভারতীয় এসব মিডিয়া।

৫ তারিখ রাত থেকেই একের পর এক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে রিপাবলিক বাংলা, জি বাংলাসহো পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু মিডিয়া। আর এর ফলে শুধু ভারত না, বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবল্মবীদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। তবে এরই মধ্যে দেশের বেশ কিছু ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রমাণ সামনে নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক ভাতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ৭ আগস্ট এই ছবিটি প্রচার করা হয়। ছবিটিতে বুঝানো হয় যে শেখ হাসিনার পতনের পর হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। অথচ রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ছবিটি ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে ঘটা সহিংসতার ছবি।

৬ আগস্ট আরও একটি ছবি প্রকাশিত হয় যাতে বলা হয় একটি হিন্দু মন্দিরে আগুন দেয়া হয়েছে। অথচ ছবিটি কোন মন্দিরের নয়। ছবিটি সাতক্ষীরার রাজপ্রাশাদ রেস্টুরেন্টের।

৫ আগস্টে এক্স বা সাবেক টুইটারে ভাইরাল হয় হিন্দু ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে এমন তথ্য। অথচ আগুনে পুড়তে থাকা বাড়িটি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিয়ানায়ক ও নড়াইলে-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফির। এ ছাড়াও ৯ আগস্ট নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে লিটন দাসও নিশ্চিত করেন যে তার বা তার পরিবারের উপরে কোন হামলা হয়নি। তারা নিরাপদেই আছেন। .

আরও একটি ছবি ছড়িয়ে পরে এক্সে, যেখানে বলা হয় পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সনাতন ধর্মী মানুষ প্রাণ ভয়ে ভারতে প্রবেশ করছেন। অথচ রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ছবিটি একটি ভিডিও থেকে নেয়া হয়েছে যা ২০১৮ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক মিলন মেলার ভিডিও।

অর্থাৎ, বলাই বাহুল্য ভারতীয় গণমাধ্যম ও ধর্মীয় গুরুরা বাংলাদেশে থাকা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা নিয়ে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর এসব গুজবের সত্যতা যাচাই না করেই দুই বাংলার সাধারণ মানুষই আতঙ্কগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে অনেক বিশ্লেষকের মতে এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের শেষ অস্ত্র দেশকে অচল করার জন্য। দলটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছে সংখ্যালঘুরা শুধুমাত্র শেখ হাসিনার শাসন আমলেই সুরক্ষিত। কিন্তু বিষয়টা সেরকম নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

গুজবে ভরা ভারতীয় মিডিয়া, টিভি চ্যানেল নাকি সার্কাস?

আপডেট সময় ০৮:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

বাংলাদেশের ছাত্রজনতার গণঅভুথ্যানকে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বলে আখ্যায়িত করছে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের টিভি চ্যানেল রিপাবলিক বাংলা। স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরা এক ভিডিওতে দেখা যায় তিনি ক্যামেরার সামনেই অনেকটা উন্মাদের মতো লাফালাফি ও চিৎকার করে দাবি করছেন এই আন্দোলন ছাত্র আন্দোলন নয়।  সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের একেক দিন দেয়া একেক বক্তব্যের সাথে তাল মিলিয়ে তাঁকে বলতে শুনা যায় যে এই আন্দোলন একটি মৌলবাদী আন্দোলন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পালিয়ে তিনি আশ্রয় নেন ভারতে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর কিছু সুযোগ সন্ধানী লোকেরা দেশের কিছু জায়গায় সনাতন ধর্মের লোক ও স্থাপনার উপর আক্রমণ করে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয় এমন প্রপাগান্ডা শুরু করে ভারতীয় এসব মিডিয়া।

৫ তারিখ রাত থেকেই একের পর এক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে রিপাবলিক বাংলা, জি বাংলাসহো পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু মিডিয়া। আর এর ফলে শুধু ভারত না, বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবল্মবীদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। তবে এরই মধ্যে দেশের বেশ কিছু ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রমাণ সামনে নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক ভাতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ৭ আগস্ট এই ছবিটি প্রচার করা হয়। ছবিটিতে বুঝানো হয় যে শেখ হাসিনার পতনের পর হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। অথচ রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ছবিটি ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে ঘটা সহিংসতার ছবি।

৬ আগস্ট আরও একটি ছবি প্রকাশিত হয় যাতে বলা হয় একটি হিন্দু মন্দিরে আগুন দেয়া হয়েছে। অথচ ছবিটি কোন মন্দিরের নয়। ছবিটি সাতক্ষীরার রাজপ্রাশাদ রেস্টুরেন্টের।

৫ আগস্টে এক্স বা সাবেক টুইটারে ভাইরাল হয় হিন্দু ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে এমন তথ্য। অথচ আগুনে পুড়তে থাকা বাড়িটি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিয়ানায়ক ও নড়াইলে-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফির। এ ছাড়াও ৯ আগস্ট নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে লিটন দাসও নিশ্চিত করেন যে তার বা তার পরিবারের উপরে কোন হামলা হয়নি। তারা নিরাপদেই আছেন। .

আরও একটি ছবি ছড়িয়ে পরে এক্সে, যেখানে বলা হয় পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সনাতন ধর্মী মানুষ প্রাণ ভয়ে ভারতে প্রবেশ করছেন। অথচ রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ছবিটি একটি ভিডিও থেকে নেয়া হয়েছে যা ২০১৮ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক মিলন মেলার ভিডিও।

অর্থাৎ, বলাই বাহুল্য ভারতীয় গণমাধ্যম ও ধর্মীয় গুরুরা বাংলাদেশে থাকা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা নিয়ে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর এসব গুজবের সত্যতা যাচাই না করেই দুই বাংলার সাধারণ মানুষই আতঙ্কগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে অনেক বিশ্লেষকের মতে এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের শেষ অস্ত্র দেশকে অচল করার জন্য। দলটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছে সংখ্যালঘুরা শুধুমাত্র শেখ হাসিনার শাসন আমলেই সুরক্ষিত। কিন্তু বিষয়টা সেরকম নয়।