ঢাকা ০৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘তোর মতো সাংবাদিককে মেরে ফেললে কী হবে?’ বলেই হামলা, নেপথ্যে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নিউজ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২০৭ বার পড়া হয়েছে

‘রেজাউল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিউজ করেছিস কেন? তোকে মেরেই ফেলব। তোর মতো সাংবাদিককে মেরে ফেললে কী হবে?’ — এমন হুমকি দিয়ে এক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে একদল লোক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা জানা গেছে। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে এই হামলার শিকার হন সময়ের কণ্ঠস্বর ও দৈনিক সময়ের আলোর বাঁশখালী প্রতিনিধি মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক বেলাল উদ্দিনের অভিযোগ, এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা এবং তাকে কৌশলে ডেকে এনে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঘটনার বর্ণনা করে বেলাল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, মঙ্গলবার নিজাম উদ্দিন নামে হামলাকারীদের একজন তাকে ফোন করে আন্দরকিল্লায় ডেকে নেন। সে আমাকে ফোন করে বলে, তৈলারদ্বীপ সেতু কেন টোলমুক্ত হচ্ছে না, সেটা নিয়ে নিউজ করা দরকার। আমি আপনাকে কিছু তথ্য দেব, আপনি আন্দরকিল্লায় আসুন। তার কথা অনুযায়ী আমি সেখানে পৌঁছানো মাত্রই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এটা শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হামলা। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

ভুক্তভোগী বেলাল আরও জানান, গত ৪ জুলাই বাঁশখালীর কুতুবদিয়া চ্যানেলে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে বেলাল উদ্দিনের একটি প্রতিবেদন একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে কোস্ট গার্ডের অভিযানে দুটি ড্রেজার জব্দ, ৪ লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাঝিকে কারাদণ্ড দেওয়ার তথ্য ছিল। সংবাদের একাংশে বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ছনুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরীর মালিকানাধীন ড্রেজারের কথাও উল্লেখ ছিল।

ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশের জেরে হামলাকারীরা রেজাউল হক চৌধুরীর নাম নিয়ে হামলা করে এবং প্রাণ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হামলায় অভিযুক্ত হিসেবে বাঁশখালী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন এবং রেজাউল হক চৌধুরীর অনুসারী মোহাম্মদ নুরুন্নবীকে শনাক্ত করেছেন বলে জানান বেলাল উদ্দিন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, বেলাল হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর, এই কারণে তাকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে পালিয়ে গেছে। তাকে পাবলিক মেরেছে।

বেলাল উদ্দিন সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদী। সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত এই আন্দোলনের মামলার বাদী কীভাবে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ হন, সেই প্রশ্নের জবাবে নুরুন্নবী কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।

হামলায় আহত সাংবাদিক মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন

নিউজটি শেয়ার করুন

‘তোর মতো সাংবাদিককে মেরে ফেললে কী হবে?’ বলেই হামলা, নেপথ্যে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নিউজ

আপডেট সময় ০৪:১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

‘রেজাউল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিউজ করেছিস কেন? তোকে মেরেই ফেলব। তোর মতো সাংবাদিককে মেরে ফেললে কী হবে?’ — এমন হুমকি দিয়ে এক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে একদল লোক। এ ঘটনায় জড়িতদের বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা জানা গেছে। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে এই হামলার শিকার হন সময়ের কণ্ঠস্বর ও দৈনিক সময়ের আলোর বাঁশখালী প্রতিনিধি মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক বেলাল উদ্দিনের অভিযোগ, এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা এবং তাকে কৌশলে ডেকে এনে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঘটনার বর্ণনা করে বেলাল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, মঙ্গলবার নিজাম উদ্দিন নামে হামলাকারীদের একজন তাকে ফোন করে আন্দরকিল্লায় ডেকে নেন। সে আমাকে ফোন করে বলে, তৈলারদ্বীপ সেতু কেন টোলমুক্ত হচ্ছে না, সেটা নিয়ে নিউজ করা দরকার। আমি আপনাকে কিছু তথ্য দেব, আপনি আন্দরকিল্লায় আসুন। তার কথা অনুযায়ী আমি সেখানে পৌঁছানো মাত্রই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এটা শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হামলা। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

ভুক্তভোগী বেলাল আরও জানান, গত ৪ জুলাই বাঁশখালীর কুতুবদিয়া চ্যানেলে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে বেলাল উদ্দিনের একটি প্রতিবেদন একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে কোস্ট গার্ডের অভিযানে দুটি ড্রেজার জব্দ, ৪ লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাঝিকে কারাদণ্ড দেওয়ার তথ্য ছিল। সংবাদের একাংশে বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ছনুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরীর মালিকানাধীন ড্রেজারের কথাও উল্লেখ ছিল।

ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশের জেরে হামলাকারীরা রেজাউল হক চৌধুরীর নাম নিয়ে হামলা করে এবং প্রাণ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হামলায় অভিযুক্ত হিসেবে বাঁশখালী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন এবং রেজাউল হক চৌধুরীর অনুসারী মোহাম্মদ নুরুন্নবীকে শনাক্ত করেছেন বলে জানান বেলাল উদ্দিন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হামলার অন্যতম অভিযুক্ত মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, বেলাল হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর, এই কারণে তাকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে পালিয়ে গেছে। তাকে পাবলিক মেরেছে।

বেলাল উদ্দিন সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদী। সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত এই আন্দোলনের মামলার বাদী কীভাবে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ হন, সেই প্রশ্নের জবাবে নুরুন্নবী কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি আবদুল করিম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।

হামলায় আহত সাংবাদিক মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন