ঢাকা ০৫:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
যুবদল নেতা বললেন: মানববন্ধনকারীরা আওয়ামী লীগ

কারওয়ানবাজারে চাঁদাবাজ বিরোধী মানববন্ধনে হামলা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ০৩:২১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে বহিরাগত ব্যক্তিরা অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তেজগাঁও থানা যুবদলের বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুর রহমানের অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আবদুর রহমান ও তাঁর অনুসারীরা কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন মার্কেট থেকে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এর প্রতিবাদেই এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা হয়। এতে কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হন। পরে ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করেন।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে কিচেন মার্কেটের সামনে সহস্রাধিক ব্যবসায়ী মানববন্ধনে অংশ নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

এরপর ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে কিচেন মার্কেটের সামনে এলে হামলাকারী ব্যক্তিরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। তারপর ব্যবসায়ীরা কিচেন মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। এ ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কিচেন মার্কেটের সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অবস্থান করছিল।

কারওয়ান বাজারের ইসলামিয়া শান্তি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কারওয়ান বাজার সুপারমার্কেট, কিচেন মার্কেট, ১ ও ২ নম্বর সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ীরা আবদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন দোকানভিত্তিক মাসিক ও দৈনিক হারে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি বরফ বিক্রেতাদের কাছ থেকেও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল তিনটি মামলা করা হয়েছে।

বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজির প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। হঠাৎ বহিরাগত কিছু লোক এসে আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে অনেক ব্যবসায়ী আহত হন। মানববন্ধনের বিষয়টি আগে থেকেই থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তারপরও হামলা হলো।’

বেলায়েত হোসেন বলেন, আবদুর রহমান তেজগাঁও থানা যুবদলের সদস্যসচিব ছিলেন, তবে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে তিনি এখনো চাঁদাবাজি করছেন।

ব্যবসায়ীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজ বলেন, যাঁরা মানববন্ধন করেছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যবসায়ীদের কমিটিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছে। সেখানে আরেকটি গ্রুপ হামলা করেছে। আর আবদুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছিল গণমাধ্যমে একটি বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে। এটা তখন ভুল–বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে হয়েছিল।

পুলিশের তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ফজলুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, মানববন্ধন চলাকালে একটি পক্ষ এসে তাঁদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মানববন্ধন শেষ হয়েছে। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের থানায় এসে মামলা করতে বলা হয়েছে। এটার সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুবদল নেতা বললেন: মানববন্ধনকারীরা আওয়ামী লীগ

কারওয়ানবাজারে চাঁদাবাজ বিরোধী মানববন্ধনে হামলা

আপডেট সময় ০৩:২১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে বহিরাগত ব্যক্তিরা অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তেজগাঁও থানা যুবদলের বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুর রহমানের অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আবদুর রহমান ও তাঁর অনুসারীরা কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন মার্কেট থেকে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এর প্রতিবাদেই এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা হয়। এতে কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হন। পরে ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করেন।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে কিচেন মার্কেটের সামনে সহস্রাধিক ব্যবসায়ী মানববন্ধনে অংশ নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

এরপর ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে কিচেন মার্কেটের সামনে এলে হামলাকারী ব্যক্তিরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। তারপর ব্যবসায়ীরা কিচেন মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। এ ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কিচেন মার্কেটের সামনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অবস্থান করছিল।

কারওয়ান বাজারের ইসলামিয়া শান্তি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কারওয়ান বাজার সুপারমার্কেট, কিচেন মার্কেট, ১ ও ২ নম্বর সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ীরা আবদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন দোকানভিত্তিক মাসিক ও দৈনিক হারে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি বরফ বিক্রেতাদের কাছ থেকেও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল তিনটি মামলা করা হয়েছে।

বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজির প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। হঠাৎ বহিরাগত কিছু লোক এসে আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে অনেক ব্যবসায়ী আহত হন। মানববন্ধনের বিষয়টি আগে থেকেই থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তারপরও হামলা হলো।’

বেলায়েত হোসেন বলেন, আবদুর রহমান তেজগাঁও থানা যুবদলের সদস্যসচিব ছিলেন, তবে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে তিনি এখনো চাঁদাবাজি করছেন।

ব্যবসায়ীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজ বলেন, যাঁরা মানববন্ধন করেছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যবসায়ীদের কমিটিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছে। সেখানে আরেকটি গ্রুপ হামলা করেছে। আর আবদুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছিল গণমাধ্যমে একটি বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে। এটা তখন ভুল–বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে হয়েছিল।

পুলিশের তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ফজলুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, মানববন্ধন চলাকালে একটি পক্ষ এসে তাঁদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মানববন্ধন শেষ হয়েছে। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের থানায় এসে মামলা করতে বলা হয়েছে। এটার সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।