জোর করে দলীয় মিছিল-মিটিংয়ে যেতে বাধ্য করা, কেউ যেতে না চাইলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়
ছাত্রলীগ নেত্রী শেলীর রাজত্ব চলে বদরুন্নেসায়
- আপডেট সময় ১০:২১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অক্টোবর ২০২৩
- / ৩০৭ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সেলিনা আক্তার শেলী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। কদিন আগেই ছাত্রলীগ আয়োজিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় উঠে এসেছিল তার নাম। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সিট-বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জোর করে দলীয় মিছিল-মিটিংয়ে যেতে বাধ্য করা, কেউ যেতে না চাইলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনও করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, হলের সাধারণ শিক্ষার্থী যারা রাজনীতি করে না তাদের মানুষই মনে করে না, যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে। আর খাবারের কথা কী বলব, খাবারের চার্টের রিসিটে লেখা আছে ৮০০ টাকা, তারা নেয় ১ হাজার টাকা। খাবারের মান অনেক খারাপ, ওই খাবার খেয়ে বেঁচে আছি এটাই অনেক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষার্থী জানান, সিটের জন্য আবেদন করার পর অফিসিয়াল কার্যক্রম শেষ করেও সিটে উঠতে পারেননি তিনি। বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেলিনার অনুসারীরা। পরে টাকা দিয়ে সিটে ওঠেন তিনি। এ টাকা সেলিনার কাছে পাঠায় তার অনুসারীরা। অভিযোগ রয়েছে, ৭ থেকে ১৩ হাজার টাকা নেওয়ার রেওয়াজ চালু রয়েছে।
কোনো স্লিপ বা ডকুমেন্টস রাখা হয় কিনা জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী বলেন, নগদ টাকা দিতে হয়। কোনো ধরনের স্লিপ কিংবা ডকুমেন্টস রাখা হয় না।
তিনি বলেন, আমি অফিসিয়ালি সিট ইস্যু করছি কিন্তু আমাকে বলছে তোর কোন মা এসে তোকে সিট দেয় আমি দেখব। তুই হলে থাকতে পারবি না, কালই তোকে হল ছাড়তে হবে। পরে শুনেছি নতুন মেয়েরা উঠেছে ওদের কাছ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা নিয়েছে। আমাকে দুদিন আগে ডেকে বলে তোমাকে আরও ৬ হাজার টাকা দিতে হবে এটা হলো চার্জ।
শুধু সিট-বাণিজ্যই নয়, বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ক্যান্টিন থেকে দৈনিক ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। বদরুন্নেসা কলেজ শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগের বিষয়ে জানান।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেলিনা। তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সিট দেয় প্রশাসন। এসবের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই তার। জোর করে প্রোগ্রামে নেওয়া হয় না বলেও দাবি করেন তিনি।
ভুক্তভোগীরা জানান, বিশেষ নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এই নেত্রী। কোনো শিক্ষার্থী এই নিয়মের বাইরে গেলে রুমে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর। আজকের পত্রিকায় এমন সব অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।