জামায়াত নেতা ড. মাসুদের কড়া হুশিয়ারি
শত বাঁধা উপেক্ষা করে মহা সমাবেশ বাস্তবায়ন করব: ড. মাসুদ
- আপডেট সময় ১০:৫২:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
- / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে
যতই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করুন ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না এবং বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে কারাগারে থাকা আলেমদের মুক্ত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) জামায়াত রাজধানীর লালবাগ-বংশাল জোনে ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও জোন পরিচালক মু. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও জোন সহকারী আহসান উল্লাহর পরিচালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জোনের ৭টি থানার আমিররা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যতই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করুন ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে জনগণের দাবি আদায়ের জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না।
তিনি বলেন, দেশে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত নেই বলেই জনগণের দুর্ভোগ আজ চরম আকার ধারণ করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশাহারা। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামরা কারাগারে বন্দি। মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি আমির হামজাসহ সব ওলামায়ে কেরামকে দেশের তৌহিদি জনতা মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকারের চূড়ান্ত পতন ঘটিয়ে বরেণ্য সব আলেমদের মুক্ত করা হবে। এর জন্যই আগামীকাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জামায়াত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই জামায়াতের মতো সুশৃঙ্খল শান্তিকামী রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচির অনুমতি দিতে কোনো টালবাহানা খুঁজবেন না। কোনো অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করে আর জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। দীর্ঘদিন জনগণ দেখছে এক একটা নতুন নতুন পয়েন্ট অজুহাত ব্যক্ত করে জনগণের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রশাসনকে স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা যদি রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের সত্যিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন। কারণ বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় আপনার বেতন হয়ে থাকে। তাই জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নির্বিঘ্নে সফল করতে প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবেন এটাই জনতার ন্যায্য দাবি। সম্মানীত ইউনিট দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা আপনারা দেশের এই সংকট পরিস্থিতি উত্তরণে সার্বিক সহযোগিতার কথা ব্যক্ত করেছেন। তা অব্যাহত রাখবেন এটা প্রত্যাশা করি। জামায়াতের এই মহাসমাবেশ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, ফ্যাসিবাদের কবল থেকে জনগণের মুক্তির জন্য। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের মানুষ আজ দিশাহারা। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা বসে থাকতে পারি না। জামায়াতে ইসলামী একটি নিপীড়িত মজলুম সংগঠন। দেশের মানুষ ও মানবতা রক্ষায় আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভাপতির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ও অবৈধ স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করতে হবে। নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। জোরপূর্বক জগদ্দল পাথরের মতো আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর জাতির ঘাড়ে চেপে আছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান এক এক করে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণের চলমান এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে সত্যিকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি কাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।আমাদের সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা আল্লাহ ব্যথিত কাউকে ভয় পাই না। শত বাধা উপেক্ষা করে আমরা আমাদের মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।
অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা, দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতারা ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আগামীকাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার জামায়াত রাজধানীর লালবাগ-বংশাল জোনে ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন করে।