একই দাবিতে মিছিল, গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৭ জানুয়ারি সরকারকে ‘লাল কার্ড’ দেখাবে জনগণ
- আপডেট সময় ১০:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪
- / ২২৮ বার পড়া হয়েছে
ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরিতে সারা দেশে মিছিল, গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লাঠি মিছিল করে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। একই দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী।
এসব কর্মসূচিতে নেতারা বলেন, ‘একতরফার নির্বাচনে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যেতে চায় না। এ কারণে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। জোর করে ভোটকেন্দ্রে নেওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয় আটকে রাখছে। মামলা ও হামলার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। ৭ জানুয়ারি জনগণ দেশের স্বার্থে সরকারকে লাল কার্ড দেখাবে। ভোট বর্জন করবে।’
ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, ‘গরিবের কষ্টার্জিত ২ হাজার কোটি টাকা দিয়ে সরকার ৭ তারিখ যে নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে। এতে জনগণ অংশগ্রহণ করবে না।’
নেতাকর্মীদের নিয়ে সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় লাঠি মিছিল করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পরে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
এ সময় রিজভী বলেন, ‘আজকে দেশে দুটি ধারা বিদ্যমান। একটি হচ্ছে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে, মানুষের ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে। আরেকটি হচ্ছে, টাকা পাচার ও লুটেরাদের পক্ষে, মানুষের অধিকার হরণের পক্ষে। আমরা যারা ন্যায়ের পক্ষে আছি তাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।’
এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহযুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, আহসান উদ্দিন খান শিপন, আব্দুল হালিম খোকন, তারেকুজ্জামান তারেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ধানমন্ডি ও এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় মিছিলসহ লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করে ছাত্রদল। এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাতুল হানিফ সাজ্জাদ, সাইফুল ইসলাম তুহিন, সালেহ মো. আদনান, ফয়সাল আহম্মেদ সোহেল, শফিকুল ইসলাম বাবু ভুঁইয়া, ওমর সানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভোট বর্জনের পক্ষে মিছিল ও গণসংযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ সময় মঞ্চের নেতারা বলেন, ‘জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি হিসাবে সরকার দেশব্যাপী বিভিন্ন বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রেখে ৭ তারিখে একটি ভোট ভোট খেলার আয়োজন করছে। সরকার ’১৪ ও ’১৮-তে যেভাবে একটা কলঙ্ক তৈরি করেছে, সে অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কের দিন হিসাবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে।’
এ সময় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে বিজয়নগরে মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে এই কর্মসূচিতে এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, মহাসচিব এসএম শাহাদাত, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী প্রমুখ অংশ নেন। পল্টন ও প্রেস ক্লাব এলাকায় মিছিল ও গণসংযোগ করে ১২ দলীয় জোট।
এ সময় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) হান্নান আহমেদ বাবলু, জাতীয় দলের শামসুল আহাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পল্টনে মিছিল করেছে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। পরে সমাবেশে দলটির সভাপতি নুর বলেন, ভেবেছিলাম বিদেশের চাপে সরকার হয়তো রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটবে। কিন্তু এদের কাছে দেশ এবং জনগণের কোনো মূল্য নেই। তারা একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আসন্ন নির্বাচন দেশ ধ্বংসের নির্বাচন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন, নাজিম উদ্দিন, শাকিল উজ্জামান প্রমুখ।
পল্টনে মিছিল করেছে ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ লেবার পার্টি। এছাড়া গণফোরাম (মন্টু), পিপলস পার্টিসহ অন্যান্য দল ভোট বর্জনের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করে। যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। এতে নেতৃত্ব দেন দলটির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। একই দাবিতে মিছিল, গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।