২০ রোজার পর বিক্রি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা
দেশের সবচেয়ে দামি অস্ত্র আমার কাছে- মাংস ব্যবসায়ী খলিল
- আপডেট সময় ০৫:৩৩:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
- / ৫৭৯ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান গত ছয় মাসে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। কখনও দাম কমিয়ে আবার কখনও বাড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন তিনি। তাকে নিয়ে বিতর্কও অনেক। কেউ বলছেন, রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিতে দাম কমিয়ে আলোচনায় থাকতে চেয়েছেন খলিল। আবার সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে নিম্নমানের মাংস দেওয়ার অভিযোগও ওঠে গণমাধ্যমে। ক্ষুব্ধ ক্রেতার সঙ্গে মারামারির ঘটনাও সামনে এসেছে। প্রথম রমজানে ৫৯৫ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রির ঘোষণা দিয়ে তাক লাগান তিনি। কিন্তু পুরো রমজান মাসে এই দরে মাংস বিক্রির কথা থাকলেও ১০ রমজানে এসে বেঁকে বসেন। এক লাফে দাম বাড়িয়ে দেন ১০০ টাকা। লোকসানের অজুহাত তুলে ভারতীয় গরু আনতে ১০ দিনের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার দাবি তোলেন। গত দুই দিনে দোকানও বন্ধ রাখেন তিনি।
খলিলের হঠাৎ এমন রহস্যজনক আচরণে যখন ক্রেতা ও সংশ্লিষ্টরা ক্ষুব্ধ, তখন গতকাল রোববার আবারও ঘোষণা দেন– ২০ রমজান পর্যন্ত ৫৯৫ টাকা কেজি দরেই মাংস বিক্রি করবেন। দিনভর এমন আলোচনার মধ্যে রাতে নতুন আলোচনার জন্ম দিলেন এই মাংস ব্যবসায়ী। নিজের কাছে দেশের সর্বোচ্চ দামি অস্ত্র আছে বলে জানালেন তিনি। শুধু তাই নয়, কেউ তাঁর সামনে এলে বেঁচে থাকতে পারবে না বলেও হুমকি দেন। এমনকি তাঁর অর্থকড়ির পরিস্থিতিও তুলে ধরেন। এক মাংস ব্যবসায়ীর সঙ্গে খলিলের ফোনালাপের এমন একটি অডিও হাতে এসেছে।
তবে এ বিষয়ে খলিলুর রহমান সমকালকে বলেন, একজনকে ভয় দেখাতেই তিনি এসব বলেছেন। আগামী ২০ রমজানের পর থেকে তিনি আর মাংস ব্যবসা করবেন না।
সম্প্রতি রাজধানীর আলমগীর নামে এক মাংস ব্যবসায়ীর সঙ্গে টেলিফোনে খলিল বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা মাংস ব্যবসায়ী যেটা হলো খলিল। আমার যে আর্মস-গান, বাংলাদেশের তিনটা ব্যক্তির কাছে আছে। যেটা সবচেয়ে দামি আর্মস। একে-৪৭ মন্ত্রী-এমপির কাছেও নেই। আমার দোকানের একটা স্টাফ দুই কোটি টাকার মালিক। মাংস ব্যবসায়ীরা অনেক শক্তিশালী। তারা অনেক ট্যাকার মালিক। আমার যদি কিছু না থাকত ওরা যে কত দিক দিয়া আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করতাছে। কত দোষ খোঁজার চেষ্টা করতাছে, পাইতাছে না। এরা জানে, আমার সামনে এলে একটাও বাইচ্চা থাকতে পারবে না। আপনাদের গর্ব আমি একটা মাংস ব্যবসায়ী খলিল।’
টেলিফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির নাম ধরে তিনি বলেন, ‘আমার স্টাফ অনেক। আমি ১৫ দিন পর পর আমার ফার্নিচার দোকানের ছাদে কাচ্চি, তেহারি– যা মন চায় তাগোরে খাওয়াই। আল্লাহ দিছে খা। আমার দোকানের পোলারা খাইবো, ওগেরো দিয়াইতো আমি কামাইছি। আমার গোস্ত দোকানে একটা লোক আছে ২৫ বছর ধইরা। ৮টা লোক আছে ২০ বছর ধইরা। আর বাদ বাকিগুলো ১২-১৩ বছর ধইরা আছে। একটাও আমারে ছাইড়া যায় না। রাইত শেষে যহন ট্যাহাটা দেহি ভাই, তহন মনডা ভইরা যায়।’
ফোনালাপের বিষয়ে খলিলুর বলেন, এক মাংস ব্যবসায়ীকে ভয় দেখানোর জন্য আমি এসব বলেছি। ২০২১ সালে অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছি। আমার কাছে যে অস্ত্র আছে তা খুবই সাধারণ। একে-৪৭ আমার কাছে নেই।
তিনি আরও বলেন, যে মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য এত কিছু করলাম, তারা এখন কেউ আমার পাশে নেই। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম এতদিন আমার কাছে কাছে থাকলেও এখন আর নেই। সরকারও আর আমার সঙ্গে নেই। ফলে আমি আর মাংস ব্যবসাই করব না। কথা দিচ্ছি, আগামী ২০ রমজানের পর আর খলিল মাংস বিতান থাকবে না। জীবনেও আর মাংস ব্যবসা করব না।