ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটে লড়তে প্রস্তুত জামায়াত, এখনো সিদ্ধান্তহীন বিএনপি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:২১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১২১ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও বর্জন প্রশ্নে বিএনপিতে ভিন্নমত আছে। এ বিষয়ে দলের কৌশল ঠিক করতে একাধিক বৈঠক হলেও এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দলটি। তবে দলটির মিত্র জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপির এমন সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও দোটানায় আছেন।
অনেক প্রার্থী কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও চূড়ান্ত কোনো বার্তা কেউ জানাতে পারছেন না। ফলে অনেক নেতা ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত কী, সে দিকেও নজর রাখবেন।

গত ২৫ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে কৌশল নির্ধারণ নিয়ে বৈঠক হয়। কমিটির সদস্যরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও বর্জনের প্রশ্নে মিশ্র অভিমত প্রকাশ করেন।

কেউ কেউ দলীয়ভাবে অংশ না নিয়ে কৌশলী অবস্থান নেওয়ার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে দল নির্বাচনে উৎসাহিত করবে না, নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে কঠোর না হওয়ার কথা এসেছে। তবে বেশির ভাগ সদস্য বলেছেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, সেখানে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া বারবার প্রতারিত হওয়া ছাড়া আর কোনো ফল পাওয়া যাবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।
আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, দেশে কোনো নির্বাচনই হয় না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। নির্বাচনব্যবস্থাটাই ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। সেখানে উপজেলা নির্বাচনে গিয়ে কী হবে?’

দলের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা আছে, উপজেলায় প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় নেতাদের উৎসাহিত করা হবে না। আবার কেউ নির্বাচনে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষেও না জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে।
ভোট করতে ইচ্ছুক এমন নেতাদের ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ নেতাদের একাংশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়  বলেন, ‘আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ শতাংশের বেশি মানুষ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছে। জনগণের সেই সমর্থনকে সম্মান দিতে হলে দলীয়ভাবে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, এই বিষয়ে আমরা কোনো কথাই বলতে চাই না। আমরা বে-খেয়াল থাকতে চাই।’

জামায়াতের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে সব সময় তাঁদের নেতারা স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে থাকেন। অতীতে বিএনপি স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করেছে এমন ভোটেও তাঁদের নেতারা প্রার্থী হয়েছিলেন।

জামায়াতের সূত্র জানায়, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সব প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁদের অনেক নেতা। সম্প্রতি দলটির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা কিছু বলতে চাচ্ছি না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’

জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, আগে যাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন কিংবা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের অনেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সামাজিকভাবে যাঁরা প্রতিষ্ঠিত এবং যাঁদের দল ও দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতা আছে, এমন নেতাদের প্রার্থী হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেহেতু উচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে, তাই দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভোটে লড়তে প্রস্তুত জামায়াত, এখনো সিদ্ধান্তহীন বিএনপি

আপডেট সময় ০১:২১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও বর্জন প্রশ্নে বিএনপিতে ভিন্নমত আছে। এ বিষয়ে দলের কৌশল ঠিক করতে একাধিক বৈঠক হলেও এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দলটি। তবে দলটির মিত্র জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপির এমন সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও দোটানায় আছেন।
অনেক প্রার্থী কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও চূড়ান্ত কোনো বার্তা কেউ জানাতে পারছেন না। ফলে অনেক নেতা ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত কী, সে দিকেও নজর রাখবেন।

গত ২৫ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে কৌশল নির্ধারণ নিয়ে বৈঠক হয়। কমিটির সদস্যরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও বর্জনের প্রশ্নে মিশ্র অভিমত প্রকাশ করেন।

কেউ কেউ দলীয়ভাবে অংশ না নিয়ে কৌশলী অবস্থান নেওয়ার পক্ষে। এ ক্ষেত্রে দল নির্বাচনে উৎসাহিত করবে না, নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁদের ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে কঠোর না হওয়ার কথা এসেছে। তবে বেশির ভাগ সদস্য বলেছেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, সেখানে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া বারবার প্রতারিত হওয়া ছাড়া আর কোনো ফল পাওয়া যাবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।
আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, দেশে কোনো নির্বাচনই হয় না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। নির্বাচনব্যবস্থাটাই ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। সেখানে উপজেলা নির্বাচনে গিয়ে কী হবে?’

দলের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা আছে, উপজেলায় প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় নেতাদের উৎসাহিত করা হবে না। আবার কেউ নির্বাচনে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষেও না জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে।
ভোট করতে ইচ্ছুক এমন নেতাদের ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ নেতাদের একাংশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়  বলেন, ‘আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ শতাংশের বেশি মানুষ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছে। জনগণের সেই সমর্থনকে সম্মান দিতে হলে দলীয়ভাবে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, এই বিষয়ে আমরা কোনো কথাই বলতে চাই না। আমরা বে-খেয়াল থাকতে চাই।’

জামায়াতের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে সব সময় তাঁদের নেতারা স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে থাকেন। অতীতে বিএনপি স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করেছে এমন ভোটেও তাঁদের নেতারা প্রার্থী হয়েছিলেন।

জামায়াতের সূত্র জানায়, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সব প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁদের অনেক নেতা। সম্প্রতি দলটির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা কিছু বলতে চাচ্ছি না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে জেলার দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’

জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, আগে যাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন কিংবা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের অনেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সামাজিকভাবে যাঁরা প্রতিষ্ঠিত এবং যাঁদের দল ও দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যতা আছে, এমন নেতাদের প্রার্থী হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেহেতু উচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে, তাই দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।