ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৌশলে জাতিকে কুরআনবিমুখ করার ষড়যন্ত্র চলছে- শিবির সভাপতি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
  • / ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের দেশে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে কুরআন বিরোধিতায় কোনো সফলতা না দেখে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কুরআনের শিক্ষাকে সুকৌশলে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রাথমিক সমাপনীর পর থেকেই বিদ্যালয়ের সিলেবাসে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক সাবজেক্টকে ঐচ্ছিক করা, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষাকে উপেক্ষা করার মাধ্যমে মূলত ছাত্রসমাজকে কুরআনবিমুখ করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখা কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহর শাখার সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল আজিজের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ইসলামী তাহজিব-তামাদ্দুন, ইসলামী মূল্যবোধ ও ইসলামিক স্বাতন্ত্র্যবোধ থেকে মানুষকে দূরে রাখার জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় যৎসামন্য যে ইসলামিক কবিতা, গল্পগুলো ছিল, সেগুলো তুলে দিয়ে তদস্থলে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মকে প্রমোট করে এমন সব গল্প-কবিতা যুক্ত করা হয়েছে। এমনকি আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্বের জন্য হুমকি অখ- বাংলার ইতিহাসও যুক্ত করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে সুকৌশলে ইসলামী তাহজিব-তামাদ্দুন, ইসলামী মূল্যবোধ, ইসলামিক স্বাতন্ত্র্যবোধ তথা কুরআনের শিক্ষাকে বাদ দেয়া হচ্ছে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যুগে যুগে আল্লাহদ্রোহীরা কুরআনকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করে গেছে। কিন্তু কেউ কুরআনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে টিকতে পারেনি। যারাই কুরআনের পেছনে লেগেছে তারাই ইতিহাসের ভিলেনে পরিণত হয়েছে। কুরআনের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ১৯৮৫ সালের ১১ মে দশম শ্রেণির ছাত্রশিবির কর্মী আব্দুল মতিন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সেলিম, শীষ মোহাম্মদ, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিকশাচালক মোক্তার হোসেন ও রেলশ্রমিক নজরুল ইসলামসহ কুরআনপ্রেমিক তৌহিদী জনতা যেভাবে তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিটি কর্মী ও এদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা এখনো তার জন্য প্রস্তুত আছে।

প্রধান বক্তা ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মসূচি নির্ধারিত হয় কুরআনের আলোকে। তারা কুরআনের আলোকে জীবনযাপন করে। তাই এ আন্দোলনের প্রতিটি কর্মী তার নিজের ধনসম্পদ ও জীবনের ওপর আঘাতকে মেনে নিতে পারলেও কুরআনের অবমাননা বারদাশত করতে পারে না। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুরআনের কর্মসূচিতে যারা বাধা প্রদান করে, তাদের জেনে রাখা উচিত, ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি কর্মী ক্যাম্পাসে অবশিষ্ট থাকলে সেই ক্যাম্পাসে কুরআনের আলোচনা থাকবে, কুরআনের দারস চলবে, কুরআনের দাওয়াত চলবে। কোনো রক্তচক্ষুকে ইসলামী ছাত্রশিবির ভয় পায় না। এ জমিনে কুরআনের আন্দোলন জারি থাকবে ততদিন, যতদিন আল্লাহর একজন গোলামও বেঁচে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা আবুজার গিফারী, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল আলিম, ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পূর্ব সভাপতি মোক্তারুল ইসলাম ও পশ্চিম সভাপতি সেলিম রেজাসহ জায়ামাত ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ছাত্রশিবির ফেনী শহর শাখার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। ফেনী শহর সভাপতি, সেক্রেটারিসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১১ মে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন মহানগর, শহর ও জেলা শাখাসমূহ আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, কুরআন উপহার প্রদান, হাফেজে কুরআন সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

কৌশলে জাতিকে কুরআনবিমুখ করার ষড়যন্ত্র চলছে- শিবির সভাপতি

আপডেট সময় ০৬:১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের দেশে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে কুরআন বিরোধিতায় কোনো সফলতা না দেখে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কুরআনের শিক্ষাকে সুকৌশলে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রাথমিক সমাপনীর পর থেকেই বিদ্যালয়ের সিলেবাসে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক সাবজেক্টকে ঐচ্ছিক করা, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষাকে উপেক্ষা করার মাধ্যমে মূলত ছাত্রসমাজকে কুরআনবিমুখ করা হচ্ছে।

গতকাল শনিবার ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখা কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহর শাখার সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল আজিজের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ইসলামী তাহজিব-তামাদ্দুন, ইসলামী মূল্যবোধ ও ইসলামিক স্বাতন্ত্র্যবোধ থেকে মানুষকে দূরে রাখার জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় যৎসামন্য যে ইসলামিক কবিতা, গল্পগুলো ছিল, সেগুলো তুলে দিয়ে তদস্থলে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মকে প্রমোট করে এমন সব গল্প-কবিতা যুক্ত করা হয়েছে। এমনকি আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্বের জন্য হুমকি অখ- বাংলার ইতিহাসও যুক্ত করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে সুকৌশলে ইসলামী তাহজিব-তামাদ্দুন, ইসলামী মূল্যবোধ, ইসলামিক স্বাতন্ত্র্যবোধ তথা কুরআনের শিক্ষাকে বাদ দেয়া হচ্ছে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যুগে যুগে আল্লাহদ্রোহীরা কুরআনকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করে গেছে। কিন্তু কেউ কুরআনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে টিকতে পারেনি। যারাই কুরআনের পেছনে লেগেছে তারাই ইতিহাসের ভিলেনে পরিণত হয়েছে। কুরআনের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ১৯৮৫ সালের ১১ মে দশম শ্রেণির ছাত্রশিবির কর্মী আব্দুল মতিন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সেলিম, শীষ মোহাম্মদ, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিকশাচালক মোক্তার হোসেন ও রেলশ্রমিক নজরুল ইসলামসহ কুরআনপ্রেমিক তৌহিদী জনতা যেভাবে তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিটি কর্মী ও এদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা এখনো তার জন্য প্রস্তুত আছে।

প্রধান বক্তা ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মসূচি নির্ধারিত হয় কুরআনের আলোকে। তারা কুরআনের আলোকে জীবনযাপন করে। তাই এ আন্দোলনের প্রতিটি কর্মী তার নিজের ধনসম্পদ ও জীবনের ওপর আঘাতকে মেনে নিতে পারলেও কুরআনের অবমাননা বারদাশত করতে পারে না। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুরআনের কর্মসূচিতে যারা বাধা প্রদান করে, তাদের জেনে রাখা উচিত, ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি কর্মী ক্যাম্পাসে অবশিষ্ট থাকলে সেই ক্যাম্পাসে কুরআনের আলোচনা থাকবে, কুরআনের দারস চলবে, কুরআনের দাওয়াত চলবে। কোনো রক্তচক্ষুকে ইসলামী ছাত্রশিবির ভয় পায় না। এ জমিনে কুরআনের আন্দোলন জারি থাকবে ততদিন, যতদিন আল্লাহর একজন গোলামও বেঁচে থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা আবুজার গিফারী, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল আলিম, ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পূর্ব সভাপতি মোক্তারুল ইসলাম ও পশ্চিম সভাপতি সেলিম রেজাসহ জায়ামাত ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ছাত্রশিবির ফেনী শহর শাখার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। ফেনী শহর সভাপতি, সেক্রেটারিসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১১ মে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন মহানগর, শহর ও জেলা শাখাসমূহ আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, কুরআন উপহার প্রদান, হাফেজে কুরআন সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।