ঢাকা ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোরআন তিলাওয়াত শুনতে নেমে আসে আকাশের মেঘখণ্ড

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
  • / ২৯৬ বার পড়া হয়েছে

কোরআন আল্লাহর কালাম। কোরআন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এটি আল্লাহর জীবন্ত নিদর্শন। এই কোরআন পাঠের নময় ‘সাকিনা’ (প্রশান্তি) নাজিল হয়।
এই প্রশান্তি আত্মিক। এই প্রশান্তি হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। কখনো কখনো বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর যুগে এক ব্যক্তি সুরা কাহফ পড়ছিল।
সে সময় তার কাছে মজবুত লম্বা দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এ সময় এক খণ্ড মেঘ তার মাথার ওপর হাজির হয়। মেঘ খণ্ড ঘুরছিল এবং নিকটবর্তী হচ্ছিল। এ দেখে তার ঘোড়াটি ছুটে পালাচ্ছিল।
সকালবেলা সে নবী (সা.)-এর কাছে এসে বিষয়টি বর্ণনা করে। এসব কথা শুনে তিনি বলেন, এটি ছিল (আল্লাহর) রহমত বা প্রশান্তি, যা কোরআন পাঠের কারণে অবতীর্ণ হয়েছিল। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৪১)

কোরআন পাঠের সময় যে ‘সাকিনা’ নাজিল হয়, কখনো কখনো পশু-পাখিও তা অনুধাবন করে। আবু সাঈদ আল খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত, এক রাতে উসাইদ ইবনে হুজাইর তাঁর ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন পাঠ করছিলেন। এমন সময় তাঁর ঘোড়া লাফঝাঁপ দিতে শুরু করল।
তিনি (কিছুক্ষণ পর) আবার পাঠ করতে থাকলে ঘোড়াটিও আবার লাফঝাঁপ দিতে শুরু করে। (কিছুক্ষণ পর) তিনি আবার পাঠ করেন। এবারও ঘোড়া লাফ দিল। উসাইদ ইবনু হুজাইর বলেন, এতে আমি আশঙ্কা করলাম যে ঘোড়াটি (শায়িত ছেলে) ইয়াহইয়াকে পদপিষ্ট করতে পারে। তাই আমি উঠে তার কাছে গেলাম। হঠাৎ আমার মাথার ওপর শামিয়ানার মতো কিছু দেখতে পেলাম। তার ভেতরে অনেক প্রদীপের মতো বস্তু আলোকিত করে আছে। অতঃপর এগুলো ওপরের দিকে শূন্যে উঠে গেল এবং আমি আর তা দেখতে পেলাম না। তিনি বলেছেন, পরদিন সকালে আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! গতকাল রাতে আমি আমার ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন মাজিদ পাঠ করছিলাম। এ অবস্থায় আমার ঘোড়া হঠাৎ লাফঝাঁপ দিতে শুরু করে। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, হে ইবনে হুজাইর! তুমি পাঠ করতে থাকতে। তিনি বলেন, আমি পাঠ করে সমাপ্ত করলাম। ইয়াহইয়া ঘোড়াটির পাশেই ছিল। তাই ঘোড়া তাকে পদদলিত করে ফেলতে পারে—আমি আশঙ্কা করলাম (এবং এগিয়ে গেলাম)। তখন আমি মেঘপুঞ্জের মতো কিছু দেখতে পেলাম, যার মধ্যে প্রদীপের মতো কোনো জিনিস আলো দিচ্ছিল। এটি ওপর দিকে উঠে গেল। এমনকি তা আমার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল। রাসুল (সা.) এসব শুনে বলেন, ওসব ছিল মালায়িকা (ফেরেশতারা)। তারা তোমার কোরআন শ্রবণ করছিল; তুমি যদি পড়তে থাকতে তাহলে ভোর পর্যন্ত তারা থাকত। আর লোকজন তাদের দেখতে পেত। তারা লোকজনের দৃষ্টির আড়াল হতো না। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৪৪)

সুবহানাল্লাহ! রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা এভাবেই কোরআনের জীবন্ত অলৌকিক বিষয় স্বচক্ষে দেখার সুযোগ পেয়েছেন, যাতে ইসলামের সত্যতা তাঁদের সামনে সন্দেহাতীতভাবে প্রতিভাত হয়ে ওঠে। মহান আল্লাহ আমাদের কোরআনময় জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

কোরআন তিলাওয়াত শুনতে নেমে আসে আকাশের মেঘখণ্ড

আপডেট সময় ০৬:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

কোরআন আল্লাহর কালাম। কোরআন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এটি আল্লাহর জীবন্ত নিদর্শন। এই কোরআন পাঠের নময় ‘সাকিনা’ (প্রশান্তি) নাজিল হয়।
এই প্রশান্তি আত্মিক। এই প্রশান্তি হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। কখনো কখনো বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

বারা ইবনে আজিব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর যুগে এক ব্যক্তি সুরা কাহফ পড়ছিল।
সে সময় তার কাছে মজবুত লম্বা দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এ সময় এক খণ্ড মেঘ তার মাথার ওপর হাজির হয়। মেঘ খণ্ড ঘুরছিল এবং নিকটবর্তী হচ্ছিল। এ দেখে তার ঘোড়াটি ছুটে পালাচ্ছিল।
সকালবেলা সে নবী (সা.)-এর কাছে এসে বিষয়টি বর্ণনা করে। এসব কথা শুনে তিনি বলেন, এটি ছিল (আল্লাহর) রহমত বা প্রশান্তি, যা কোরআন পাঠের কারণে অবতীর্ণ হয়েছিল। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৪১)

কোরআন পাঠের সময় যে ‘সাকিনা’ নাজিল হয়, কখনো কখনো পশু-পাখিও তা অনুধাবন করে। আবু সাঈদ আল খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত, এক রাতে উসাইদ ইবনে হুজাইর তাঁর ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন পাঠ করছিলেন। এমন সময় তাঁর ঘোড়া লাফঝাঁপ দিতে শুরু করল।
তিনি (কিছুক্ষণ পর) আবার পাঠ করতে থাকলে ঘোড়াটিও আবার লাফঝাঁপ দিতে শুরু করে। (কিছুক্ষণ পর) তিনি আবার পাঠ করেন। এবারও ঘোড়া লাফ দিল। উসাইদ ইবনু হুজাইর বলেন, এতে আমি আশঙ্কা করলাম যে ঘোড়াটি (শায়িত ছেলে) ইয়াহইয়াকে পদপিষ্ট করতে পারে। তাই আমি উঠে তার কাছে গেলাম। হঠাৎ আমার মাথার ওপর শামিয়ানার মতো কিছু দেখতে পেলাম। তার ভেতরে অনেক প্রদীপের মতো বস্তু আলোকিত করে আছে। অতঃপর এগুলো ওপরের দিকে শূন্যে উঠে গেল এবং আমি আর তা দেখতে পেলাম না। তিনি বলেছেন, পরদিন সকালে আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! গতকাল রাতে আমি আমার ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন মাজিদ পাঠ করছিলাম। এ অবস্থায় আমার ঘোড়া হঠাৎ লাফঝাঁপ দিতে শুরু করে। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, হে ইবনে হুজাইর! তুমি পাঠ করতে থাকতে। তিনি বলেন, আমি পাঠ করে সমাপ্ত করলাম। ইয়াহইয়া ঘোড়াটির পাশেই ছিল। তাই ঘোড়া তাকে পদদলিত করে ফেলতে পারে—আমি আশঙ্কা করলাম (এবং এগিয়ে গেলাম)। তখন আমি মেঘপুঞ্জের মতো কিছু দেখতে পেলাম, যার মধ্যে প্রদীপের মতো কোনো জিনিস আলো দিচ্ছিল। এটি ওপর দিকে উঠে গেল। এমনকি তা আমার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল। রাসুল (সা.) এসব শুনে বলেন, ওসব ছিল মালায়িকা (ফেরেশতারা)। তারা তোমার কোরআন শ্রবণ করছিল; তুমি যদি পড়তে থাকতে তাহলে ভোর পর্যন্ত তারা থাকত। আর লোকজন তাদের দেখতে পেত। তারা লোকজনের দৃষ্টির আড়াল হতো না। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৪৪)

সুবহানাল্লাহ! রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা এভাবেই কোরআনের জীবন্ত অলৌকিক বিষয় স্বচক্ষে দেখার সুযোগ পেয়েছেন, যাতে ইসলামের সত্যতা তাঁদের সামনে সন্দেহাতীতভাবে প্রতিভাত হয়ে ওঠে। মহান আল্লাহ আমাদের কোরআনময় জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন।