নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সহ-সভাপতির মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা
- আপডেট সময় ০৯:১৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
- / ১২৬ বার পড়া হয়েছে
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে আসন্ন দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দুই প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে চলছে প্রকাশ্যে বিরোধিতা। পাল্টাপাল্টি হামলা-মামলা ককটেল বিস্ফোরণ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ ও গুলির ঘটনাও ঘটেছে। উপজেলাতে দিন দিন উত্তেজনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। এতে সাধারণ মানুষদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিত করছেন। এর মধ্যে আনারস প্রতীক নিয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউর রহমান খান জানু, দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম খান এবং মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মোবারক হোসেন খান পান্নু নির্বাচনের মাঠ লড়ছেন। তিন প্রার্থীর মধ্যে একজন নিরব থাকলেও মূলত রেজাউর রহমান খান জানু ও আব্দুর রহিম খানের বিরোধিতা ও পরস্পর পালটাপাল্টি অভিযোগে মানববন্ধন, গুলির ঘটনাও ঘটছে।
এ দিকে শুক্রবার (১০ মে) বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার বোয়ালী ডাক্তারখানা এলাকায় জানুর দুই কর্মী পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে রহিম খানের কর্মীরা সুজন ও জনি নামের দুজনকে মারধর করেন।
এ সময় খবর পেয়ে রেজাউর রহমান খান জানুর বড় ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ফহিম খান রনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্য়ায়ে তিনি আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। ঘটনার কিছুক্ষণ পরে রহিম খানের কয়েক শত কর্মী সর্মথকরা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ ও মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার ঘটনা স্থলে এসে বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বোয়ালী ডাক্তারখানা এলাকায় তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় রহিম খানের সর্মথকরা থানায় জয় ঘোষ, ফহিম খান রনি ও তার চাচাতো ভাই আরুয়া আউনিয়নের চেয়ারম্যান মুস্তাকিম খান অনিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
অপর দিকে এ ঘটনায় রেজাউর রহমান জানুর সমর্থক আবু আহাদ থানায় জয় ঘোষ ও শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলালসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। এর কয়েক দিন আগে আব্দুর রহিম খানের গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেপড়া এলাকায় পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেন উভয় দলের কর্মী সর্মথকরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দিয়ে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল।
যা এখন পুলিশ তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানুর সর্মথকরা আমার কর্মীদের ওপর হামলা ও বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। আমার কয়েকজন কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে, আমার গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে। এছাড়া আমার কর্মী জয় ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি করেছেন তার ছেলে। এতে আমি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত।’
আনারস প্রতীকের প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানু বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তার কতিপয় কর্মীরা আমার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনো এমপি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে পারবেন না, সেখানে রহিম খানের পক্ষ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনসহ সবাইকে লিখিত আকারে জানাবো।’
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ বলেন, ‘শিবালয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিবেশ নষ্টের জন্য কয়েকজনের নাম উঠে আসছে বার বার। এরা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে ও তার ভাতিজা। আমি বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। যাতে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হয়।’
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো. আব্দুর রফউ সরকার জানান, রহিম খানের সমর্থক জয় ঘোষ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। অপর দিকে রেজাউর রহমান জানু সাহেবের সমর্থক আবু আহাদ আরেকটি মামলা করেছেন। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।