ঢাকা ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের এমপিকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিলেন কাউন্সিলর

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
  • / ১৭০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনকে ঠাকুরগাঁও থেকে বিতাড়িত করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আইনজীবী অরুনাংশু দত্ত টিটোর নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এমপিকে ‌‘হারামজাদা’ বললেন স্থানীয় নেতা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এমপিকে ‌‘হারামজাদা’ বললেন স্থানীয় নেতা
এ সময় তার দেওয়া ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ওই ভিডিওতে সংসদ রমেশ চন্দ্র সেনের উদ্দেশ্যে কাউন্সিলর আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, ‘জীবনে তো ভোট করেনি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেনি কারো সঙ্গে। ওই অটোপাস এমপি সবাইকে হুমকি দিয়ে কাউন্সিলরদের বিভ্রান্ত করেছে। আবার কিছু কাউন্সিলর বাসস্ট্যান্ডে কথা বলেছে। কিন্তু তারা ঠিকই আছে, কোনো রকমে বিভ্রান্ত হয়নি। তাদের জোর করে আনা হয়েছে। ওনারা (কাউন্সিলর) এখানে (বাসস্ট্যান্ড এলাকায়) এসে বলছে, আমরা আওয়ামী লীগের মূল স্রোতে আছি। ওনারা যদি মূল স্রোত হয়, তাহলে আমরা কোনো আওয়ামী লীগ করছি? যার বাপ (বাবা) করে জামায়েত, ভাই করে বিএনপি, একাই করে আওয়ামী লীগ, ওনি নাকি মূল স্রোত। আজব কথা। আমরাই মূল স্রোত, মূল আওয়ামী লীগ।’

আরও বলতে শোনা যায়, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না, ঠাকুরগাঁওয়ে আপনাদের ঠাঁই হবে না। ওই রমেশ সেনকে রুহিয়া থেকে টিটো দত্ত ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে আসছে। আবার বিদায় করে দেব। রাত ৩টা বাজলো টিটো দত্তকে পাওয়া যায়, আর ওনি এমন নেতা কলিংবেল বাজলেও তাকে পাওয়া যায় না।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, মনের ক্ষোভ থেকেই আমি এমপিকে বলেছি। তিনি যেভাবে পক্ষপাতিত্ব করছেন তা মোটেও কাম্য নয়। যেহেতু আমরা সবাই একই দলের। তিনি আমাদের অভিভাবক। তিনি কেন পক্ষ নিয়ে কাজ করবেন।

এ ব্যাপারে সংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, সবাই একই দলের প্রার্থী। নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু হয়। কেউ যাতে নির্বাচনী সভাগুলোতে ভয় প্রদর্শন করতে না পারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হুমকি বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অরুনাংশু দত্ত টিটো (আনারস প্রতীক), সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার (মোটরসাইকেল প্রতীক), সহসভাপতি রওশনুল হক তুষার (ঘোড়া প্রতীক) ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান খোকন (কাপ-পিরিচ প্রতীক)

এ ছাড়াও চার চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১ পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৩, নারী ২ লাখ ৪২ হাজার ২৬৮ ও হিজরা ৪ জন। ১৮৫টা ভোট কেন্দ্র রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগের এমপিকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিলেন কাউন্সিলর

আপডেট সময় ১২:০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনকে ঠাকুরগাঁও থেকে বিতাড়িত করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আইনজীবী অরুনাংশু দত্ত টিটোর নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এমপিকে ‌‘হারামজাদা’ বললেন স্থানীয় নেতা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এমপিকে ‌‘হারামজাদা’ বললেন স্থানীয় নেতা
এ সময় তার দেওয়া ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ওই ভিডিওতে সংসদ রমেশ চন্দ্র সেনের উদ্দেশ্যে কাউন্সিলর আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, ‘জীবনে তো ভোট করেনি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেনি কারো সঙ্গে। ওই অটোপাস এমপি সবাইকে হুমকি দিয়ে কাউন্সিলরদের বিভ্রান্ত করেছে। আবার কিছু কাউন্সিলর বাসস্ট্যান্ডে কথা বলেছে। কিন্তু তারা ঠিকই আছে, কোনো রকমে বিভ্রান্ত হয়নি। তাদের জোর করে আনা হয়েছে। ওনারা (কাউন্সিলর) এখানে (বাসস্ট্যান্ড এলাকায়) এসে বলছে, আমরা আওয়ামী লীগের মূল স্রোতে আছি। ওনারা যদি মূল স্রোত হয়, তাহলে আমরা কোনো আওয়ামী লীগ করছি? যার বাপ (বাবা) করে জামায়েত, ভাই করে বিএনপি, একাই করে আওয়ামী লীগ, ওনি নাকি মূল স্রোত। আজব কথা। আমরাই মূল স্রোত, মূল আওয়ামী লীগ।’

আরও বলতে শোনা যায়, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না, ঠাকুরগাঁওয়ে আপনাদের ঠাঁই হবে না। ওই রমেশ সেনকে রুহিয়া থেকে টিটো দত্ত ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে আসছে। আবার বিদায় করে দেব। রাত ৩টা বাজলো টিটো দত্তকে পাওয়া যায়, আর ওনি এমন নেতা কলিংবেল বাজলেও তাকে পাওয়া যায় না।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, মনের ক্ষোভ থেকেই আমি এমপিকে বলেছি। তিনি যেভাবে পক্ষপাতিত্ব করছেন তা মোটেও কাম্য নয়। যেহেতু আমরা সবাই একই দলের। তিনি আমাদের অভিভাবক। তিনি কেন পক্ষ নিয়ে কাজ করবেন।

এ ব্যাপারে সংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, সবাই একই দলের প্রার্থী। নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু হয়। কেউ যাতে নির্বাচনী সভাগুলোতে ভয় প্রদর্শন করতে না পারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হুমকি বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অরুনাংশু দত্ত টিটো (আনারস প্রতীক), সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার (মোটরসাইকেল প্রতীক), সহসভাপতি রওশনুল হক তুষার (ঘোড়া প্রতীক) ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান খোকন (কাপ-পিরিচ প্রতীক)

এ ছাড়াও চার চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১ পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৩, নারী ২ লাখ ৪২ হাজার ২৬৮ ও হিজরা ৪ জন। ১৮৫টা ভোট কেন্দ্র রয়েছে।