ভোটকেন্দ্র দখলের জেরে চবি ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০
- আপডেট সময় ০৪:৩২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪
- / ২৭২ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে কেন্দ্র দখলের সময় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার রেশ ধরে শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত দশজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কুপিয়ে জখম হওয়া ছাত্রলীগ কর্মীর নাম সালা উদ্দিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিজয়ের গ্রুপের কর্মী ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক উপ-ক্রীড়া সম্পাদক। কুপিয়ে জখম করা নেতা কর্মীরা ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপ ‘চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার’ নামে পরিচিত। এর জেরেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মধ্যে বিকেল চারটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের পাশে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসব ঘটনায় ভোটকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা থেকে চারটি রামদা উদ্ধার করেছে প্রক্টরিয়াল বডি।
স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ৪৫ জন। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরীর সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদের আরেক প্রার্থী উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল আলমের সমর্থনে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
আজ দুপুর থেকেই কেন্দ্র দখল করার উদ্দেশে সিএফসির নেতা-কর্মীরা ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় ভিড় করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে সালা উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন নেতা-কর্মী ওই কেন্দ্রের দিকে গেলে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এর একপর্যায়ে সালা উদ্দিনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিজয় গ্রুপ নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল ও এ এফ রহমান হল থেকে লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে শহীদ আব্দুর রব হলের দিকে যান। ওই হল সিএফসির নেতা-কর্মীদের দখলে রয়েছে। পরে সিএফসির নেতা-কর্মীরা শহীদ আব্দুর রব হল থেকে লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে বের হন। এর জেরে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম সমকালকে বলেন, ‘নির্বাচন কেন্দ্রিক বিশৃঙ্খলা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। সেখানে আমাদের একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা তৎক্ষণাৎ তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠিয়েছি। সে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন। যারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা এরইমধ্যে কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি।’
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএফসির গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সোপান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অধিকাংশই বাইরের জেলা থেকে এসেছেন। তাই স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে গ্রুপের সিনিয়র বা নেতাদের কোনো নির্দেশনা নেই। কেউ অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করলে তার দায়ভার সংগঠন নেবে না। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করেছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘সিএফসির নেতা-কর্মীরা কেন্দ্র দখল করার উদ্দেশে এসেছিলেন। সালা উদ্দিন বাধা দেওয়ায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।’ তবে নিজ কর্মীদের মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।