আল-জুবায়ের ‘ফিলিস্তিনি জনগণের মানবিক দুর্ভোগ কমাতে যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে গাজায় ইসরাইলের ‘অপরাধ’ এবং ‘শক্তিপ্রয়োগ’ জাতিসঙ্ঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের ‘একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’। তিনি যুদ্ধবিরতির জন্য সৌদি আরবের আহ্বান এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের যেকোনো প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আল-জুবায়ের আরো বলেছেন যে সৌদি আরব ‘যেকোনও সমাধান যা ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের বৈধ অধিকার পুনরুদ্ধারের আকাক্সক্ষা পূরণ করে না, অর্থাৎ পূর্ব জেরুসালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্তে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ প্রত্যাখ্যান করে। অন্য দিকে টেলিগ্রামে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল হামাস এক বিবৃতিতে বাগদাদে শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের ইসরাইলের ওপর জরুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।
অন্য দিকে শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি বলে, গাজায় গণহত্যা এমন এক কদর্যতার স্তরে পৌঁছেছে, যা ইতিহাসের সমস্ত অতীত সঙ্ঘাতকে ছাড়িয়ে গেছে। শিয়া আল-সুদানি লেবানন এবং গাজা পুনর্গঠনে তার দেশ ৪০ মিলিয়ন ডলার (৪ কোটি) দেবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
আরব নেতাদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে সুদানি বলেন, পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় আরব তহবিলকে সমর্থন করে ইরাক। এজন্য গাজা পুনর্গঠনে ২০ মিলিয়ন এবং লেবানন পুনর্গঠনে ২০ মিলিয়ন অর্থ সহায়তা করবে ইরাক। গতকাল বাগদাদে অনুষ্ঠিত আরব লীগের বার্ষিক সম্মেলনে আঞ্চলিক নেতারা মিলিত হন, যেখানে গাজায় চলমান যুদ্ধ আবারো মুখ্য ইস্যু হয়ে ওঠার কথা ছিল।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাগদাদ ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা প্রত্যাখ্যান করে, গাজায় গণহত্যা, পশ্চিমতীর এবং অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানায়। গত মার্চ মাসে কায়রোতে আয়োজিত এক জরুরি সম্মেলনে আরব নেতারা গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের একটি প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান, যেখানে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ না করেই পুনর্গঠনের আহ্বান জানানো হয়।
বাগদাদে আরব সম্মেলনটি আড়ালে পড়ে যায় মূলত মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের কারণে। অনেকেই আশা করেছিল, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের সফরে গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নতুন কোনো প্রস্তাবনা থাকবে। কিন্তু তিনি সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার সঙ্গে বৈঠক করে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে যান। শারা এক সময় সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনীকে হঠানোর জন্য লড়াই করে। ওই বৈঠকে ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শনিবার বাগদাদে এমন এক সময় এই আরব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো যখন জানুয়ারিতে ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর গাজায় নতুন করে ভয়াবহ হামলা করে যাচ্ছে নেতানিয়াহু। মূলত হামাসকে নির্মূল করতেই তারা গাজায় স্থল অভিযান জোরদার করেছে।