জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা
আবু সাঈদ হত্যায় মিলেছে বেরোবির সাবেক উপাচার্যের সম্পৃক্ততা
- আপডেট সময় ১১:৩৮:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্তা মিলেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদের। আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২–এ দ্বিতীয় দিনের মতো জবানবন্দিতে এ কথা বলেন।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল–২–এ এই মামলার বিচার চলছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ২০২৪ সালের নিরীহ–নিরস্ত্র ছাত্র–জনতার কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য হাসিবুর রশীদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও অন্য আসামিদের বেআইনি কার্যক্রম প্রতিরোধে কোনোরূপ ব্যবস্থা নেননি তিনি।
সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ এ মামলায় মোট আসামি ৩০ জন। এর মধ্যে হাসিবুরসহ ২৪ আসামি পলাতক। অন্য ছয় আসামি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
এ মামলার আরেক পলাতক আসামি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময়কার রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। তাঁর বিষয়ে জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, মনিরুজ্জামানও ২০২৪ সালের নিরীহ–নিরস্ত্র ছাত্র–জনতার কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ সদস্যদের সহযোগিতা ও ইন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে আবু সাঈদকে নির্বিচার গুলি করে হত্যা এবং অন্যদের গুরুতর জখম করার নির্দেশ দেন। ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক ও নিরীহ ছাত্র–জনতাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে নির্যাতনের মাধ্যমে হয়রানি করেন। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তিনি।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ছয় আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁদের মধ্যে একজন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম। তাঁর বিষয়ে জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, সাবেক প্রক্টর শরিফুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও অন্য আসামিদের বেআইনি কার্যক্রম প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আবু সাঈদকে হত্যা এবং অন্যদের গুরুতর জখম করার ঘটনায় উসকানি দেন ও সহযোগিতা করেন তিনি। এ ছাড়া আন্দোলন দমনে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের বেআইনি কার্যক্রম নিবারণে কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন আরও বলেন, আবু সাঈদকে হত্যা এবং অন্যদের গুরুতর জখম করতে উসকানি দেন ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া। এ ছাড়া তিনি গত বছরের ১১ জুলাই আবু সাঈদকে থাপ্পড় মারেন।
পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেন বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
সংবাদ ২৪৭/এজে











