ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়ে জয় পাকিস্তানের

৩৪৫ রান তাড়া করে বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়ে জয় পাকিস্তানের

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

সেঞ্চুরি পেয়ে দু’হাত উত্তোলন করে রিজওয়ানের দুয়া।

লক্ষ্য ৩৪৫, জিততে হলে বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়তে হবে পাকিস্তানকে। রানের পাহাড়ে চোখ, পিঠে বিশাল চাপ—এই নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস ওপেন করতে নামেন ইমাম-উল-হক আর আবদুল্লাহ শফিক।

ইমাম না হয় এ ম্যাচ খেলতে নেমেছে ৬৭ ওয়ানডের অভিজ্ঞতা নিয়ে। কিন্তু শফিক এর আগে ওয়ানডে খেলেছেন ৪টি, লিস্ট ‘এ’ ম্যাচের অভিজ্ঞতাই তো মাত্র ৮ ম্যাচের। সেই শফিককে উইকেটে রেখে ইমাম আউট হয়ে গেলেন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে, পাকিস্তানকে ১৬ রানে রেখে। দ্রুতই ইমামকে অনুসরণ করলেন ১০৯ ওয়ানডেতে ৫ হাজারের ওপরে রান করা অধিনায়ক বাবর আজমও। এরপর যে কারওই মনে হতে পারে, ইমাম-বাবর যা যখন পারলেন না, বিশাল এই রান তাড়ায় কি থই পাবেন শফিকের মতো অনভিজ্ঞ কেউ!

শেষ পর্যন্ত সেই শফিকই থই পেলেন। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ রিজওয়ানের সংগত পেয়ে তিনি শ্রীলঙ্কার বোলারদের জন্য হয়ে উঠলেন ভয়ংকর। ১০ চার ও ৩ ছয়ে ১০৩ বলে ১১৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেললেন। রিজওয়ানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১৫৬ বলে গড়লেন ১৭৬ রানের জুটি, যে জুটিতে তাঁর অবদান ৮৬ বলে ৯৯ রান।

পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপ অভিষেকেই সেঞ্চুরি করেছেন আবদুল্লাহ শফিক।

মূলত এই জুটিতে ভর করেই প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করল পাকিস্তান। শফিক আউট হয়ে গেলেও রিজওয়ান মাঠ ছেড়েছেন পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে। ৮ চার ও ৩ ছয়ে ১২১ বলে অপরাজিত ১৩১ রান করেছেন রিজওয়ান।

হায়দরাবাদে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতল বাবরের দল। এই জয়ে বিশ্বকাপে সফল রান তাড়ার রেকর্ডও গড়ল পাকিস্তান। এর আগে বিশ্বকাপে সফল রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে চেন্নাইয়ের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৮ রান তাড়া করে আইরিশরা জিতেছিল ৩ উইকেটে।

এর আগে পাকিস্তানের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন মেন্ডিস, সেঞ্চুরি পেয়েছেন সামারাবিক্রমাও। জোড়া সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না। হাসান আলী তাঁর প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান না করেই ফিরে যান লঙ্কান ওপেনার কুশল পেরেরা। শ্রীলঙ্কার রান তখন মাত্র ৫।

এরপর উইকেটে আসেন মেন্ডিস। উইকেটে আসার পর মুখোমুখি হওয়া প্রথম ৫ বলে কোনো রান পাননি মেন্ডিস। ষষ্ঠ বলে শাহিন আফ্রিদিকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। আফ্রিদি, হাসান আলী বা হারিস রউফ—কাউকেই বিশেষ পাত্তা দেননি মেন্ডিস। হাসান আলীর বলে ইমামের অসাধারণ এক ক্যাচে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১২২ রান। ৭৭ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১৪টি চার ও ৬টি ছয়।

আউট হওয়ার আগে দুটি শতরানের জুটি গড়েছেন মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পাতুম নিশাঙ্কাকে নিয়ে ৯৫ বলে তুলেছেন ১০২ রান। এ জুটিতে তাঁর অবদান ৪০ বলে ৫০। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সামারাবিক্রমাকে নিয়ে তুলেছেন ৬৯ বলে ১১১ রান। মেন্ডিস ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক। এই জুটিতে তাঁর অবদান ৩৭ বলে ৭২ রান।

মেন্ডিস অবশ্য আউট হতে পারতেন ব্যক্তিগত ১৮ রানেই। শাহিন আফ্রিদির করা ইনিংসের সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে তাঁর সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন ইমামই। সেই সময় শ্রীলঙ্কার রান ছিল ১ উইকেটে ৩৫।

‘জীবন’ পেয়ে তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন মেন্ডিস। আউট হওয়ার আগে সেঞ্চুরি করেছেন ৬৫ বলে, যেটা বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার দ্রুততম। এর আগে বিশ্বকাপে লঙ্কানদের দ্রুততম সেঞ্চুরিটি ছিল কুমার সাঙ্গাকারার। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ওয়েলিংটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ৭০ বলে।

শ্রীলঙ্কার আরেক সেঞ্চুরিয়ান সামারাবিক্রমা অবশ্য অতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন না। সামারাবিক্রমা তাঁর ৮৯ বলে ১০৮ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১১ চার ও ২ ছয়ে। তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি ৮২ বলে। এ ছাড়া ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা ৬১ বলে করেছেন ৫১ রান।

পাকিস্তানের পক্ষে ৭১ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী। হারিস রউফ ২টি ও ১টি করে উইকেট নেন আফ্রিদি, মোহাম্মদ নেওয়াজ ও শাদাব খান।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়ে জয় পাকিস্তানের

৩৪৫ রান তাড়া করে বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়ে জয় পাকিস্তানের

আপডেট সময় ১১:৪৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩

লক্ষ্য ৩৪৫, জিততে হলে বিশ্বকাপের রেকর্ড গড়তে হবে পাকিস্তানকে। রানের পাহাড়ে চোখ, পিঠে বিশাল চাপ—এই নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস ওপেন করতে নামেন ইমাম-উল-হক আর আবদুল্লাহ শফিক।

ইমাম না হয় এ ম্যাচ খেলতে নেমেছে ৬৭ ওয়ানডের অভিজ্ঞতা নিয়ে। কিন্তু শফিক এর আগে ওয়ানডে খেলেছেন ৪টি, লিস্ট ‘এ’ ম্যাচের অভিজ্ঞতাই তো মাত্র ৮ ম্যাচের। সেই শফিককে উইকেটে রেখে ইমাম আউট হয়ে গেলেন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে, পাকিস্তানকে ১৬ রানে রেখে। দ্রুতই ইমামকে অনুসরণ করলেন ১০৯ ওয়ানডেতে ৫ হাজারের ওপরে রান করা অধিনায়ক বাবর আজমও। এরপর যে কারওই মনে হতে পারে, ইমাম-বাবর যা যখন পারলেন না, বিশাল এই রান তাড়ায় কি থই পাবেন শফিকের মতো অনভিজ্ঞ কেউ!

শেষ পর্যন্ত সেই শফিকই থই পেলেন। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ রিজওয়ানের সংগত পেয়ে তিনি শ্রীলঙ্কার বোলারদের জন্য হয়ে উঠলেন ভয়ংকর। ১০ চার ও ৩ ছয়ে ১০৩ বলে ১১৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেললেন। রিজওয়ানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১৫৬ বলে গড়লেন ১৭৬ রানের জুটি, যে জুটিতে তাঁর অবদান ৮৬ বলে ৯৯ রান।

পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপ অভিষেকেই সেঞ্চুরি করেছেন আবদুল্লাহ শফিক।

মূলত এই জুটিতে ভর করেই প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করল পাকিস্তান। শফিক আউট হয়ে গেলেও রিজওয়ান মাঠ ছেড়েছেন পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে। ৮ চার ও ৩ ছয়ে ১২১ বলে অপরাজিত ১৩১ রান করেছেন রিজওয়ান।

হায়দরাবাদে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতল বাবরের দল। এই জয়ে বিশ্বকাপে সফল রান তাড়ার রেকর্ডও গড়ল পাকিস্তান। এর আগে বিশ্বকাপে সফল রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে চেন্নাইয়ের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৮ রান তাড়া করে আইরিশরা জিতেছিল ৩ উইকেটে।

এর আগে পাকিস্তানের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন মেন্ডিস, সেঞ্চুরি পেয়েছেন সামারাবিক্রমাও। জোড়া সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না। হাসান আলী তাঁর প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান না করেই ফিরে যান লঙ্কান ওপেনার কুশল পেরেরা। শ্রীলঙ্কার রান তখন মাত্র ৫।

এরপর উইকেটে আসেন মেন্ডিস। উইকেটে আসার পর মুখোমুখি হওয়া প্রথম ৫ বলে কোনো রান পাননি মেন্ডিস। ষষ্ঠ বলে শাহিন আফ্রিদিকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। আফ্রিদি, হাসান আলী বা হারিস রউফ—কাউকেই বিশেষ পাত্তা দেননি মেন্ডিস। হাসান আলীর বলে ইমামের অসাধারণ এক ক্যাচে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১২২ রান। ৭৭ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১৪টি চার ও ৬টি ছয়।

আউট হওয়ার আগে দুটি শতরানের জুটি গড়েছেন মেন্ডিস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পাতুম নিশাঙ্কাকে নিয়ে ৯৫ বলে তুলেছেন ১০২ রান। এ জুটিতে তাঁর অবদান ৪০ বলে ৫০। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সামারাবিক্রমাকে নিয়ে তুলেছেন ৬৯ বলে ১১১ রান। মেন্ডিস ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক। এই জুটিতে তাঁর অবদান ৩৭ বলে ৭২ রান।

মেন্ডিস অবশ্য আউট হতে পারতেন ব্যক্তিগত ১৮ রানেই। শাহিন আফ্রিদির করা ইনিংসের সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে তাঁর সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন ইমামই। সেই সময় শ্রীলঙ্কার রান ছিল ১ উইকেটে ৩৫।

‘জীবন’ পেয়ে তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন মেন্ডিস। আউট হওয়ার আগে সেঞ্চুরি করেছেন ৬৫ বলে, যেটা বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার দ্রুততম। এর আগে বিশ্বকাপে লঙ্কানদের দ্রুততম সেঞ্চুরিটি ছিল কুমার সাঙ্গাকারার। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ওয়েলিংটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ৭০ বলে।

শ্রীলঙ্কার আরেক সেঞ্চুরিয়ান সামারাবিক্রমা অবশ্য অতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন না। সামারাবিক্রমা তাঁর ৮৯ বলে ১০৮ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১১ চার ও ২ ছয়ে। তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি ৮২ বলে। এ ছাড়া ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা ৬১ বলে করেছেন ৫১ রান।

পাকিস্তানের পক্ষে ৭১ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী। হারিস রউফ ২টি ও ১টি করে উইকেট নেন আফ্রিদি, মোহাম্মদ নেওয়াজ ও শাদাব খান।