বঙ্গবাজারে টাকা চেয়ে ব্যবসায়ীদেরকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হুমকি
- আপডেট সময় ১০:৪৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩
- / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর বঙ্গবাজারে ব্যবসায়ীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনা পুলিশকে জানালে প্রাণনাশের হমকি দিয়েছে তারা। গত বুধবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বকশিবাজারে ব্যবসায়ীদের সাথে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভয়ে দোকান খুলছেন না কয়েকজন ব্যবসায়ী। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ও ছবি গণমাধ্যমের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বঙ্গবাজারের আলাউদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীর পক্ষ নিয়ে আরেক ব্যবসায়ী রবিনের দোকানে যায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক রিয়াজ বিন ওহাব, গত কমিটির কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক ও বর্তমানে ঢাবির কবি জসীম উদ্দীন হলের পদপ্রত্যাশী নেতা তানভীর হোসেন তুষারসহ ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী। এ সময় ব্যবসায়ী রবিনের কাছে আলাউদ্দিন ১৩ লাখ টাকা পাবে এমন দাবি করে ওই টাকা রবিনকে দিতে বলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা। কিন্তু আলাউদ্দিন কোনো টাকা পাবে না রবিনের কাছে- এমন দাবি করলে তাকে ধরে নিয়ে যেতে চায় অভিযুক্তরা। এ সময় বঙ্গবাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর শুরু করে তারা। মারধরের একপর্যায়ে সেখানে ভাঙচুরও চালানো হয়। অভিযুক্তরা সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রবিন বলেন, ওইদিন আলাউদ্দিন ছাত্রলীগের রিয়াজ বিন ওয়াহাবকে সাথে নিয়ে আমার কাছে ১৩ লাখ টাকা দাবি করে হঠাৎ আমার দোকানে হামলা করে। তখন অন্য ব্যবসায়ীরা বাধা দিতে চাইলে তাদেরও মারধর করে। একপর্যায়ে আমি সেখান থেকে পালিয়ে আমার বাসা সাভারে চলে যাই। জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় আমি ভয়ে ওইদিকে আর যাইনি।
রেদুয়ান মীর পল্লব নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি বঙ্গবাজারে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা করি। রিয়াজ, সালমান, তুষারসহ ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রবিন নামে এক ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে যেতে চাচ্ছিল। পরে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা বাধা দিলে আমাদের ইচ্ছামতো তারা মারধর করে। তারা মাতাল অবস্থায় ছিল। আমার শরীরে জখম ছাড়াও চোখে আঘাত পেয়েছি। মারধরের সময় তুষার আমার পকেট থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ ঘটনা কাউকে জানালে আমাদের মেরে ফেলবে বলে জানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারছি না।
তবে, মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ বিন ওহাব ঘটনাস্থলে ছিলেন না দাবি করলেও আরেক অভিযুক্ত নেতা তানভীর হোসেন তুষার জানান, তারা দু’জনেই ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাদের দাবি, ঝামেলা হয়েছে তবে মারধর হয়নি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক রিয়াজ বিন ওহাব বলেন, আমার কাছে ক্যাম্পাসের কয়েকজন ছোট ভাই আসছিল। তাদের এক বড় ভাই একজনের কাছে টাকা পায়। পরে আমি দুই পক্ষের সাথে বসে সমাধান করার কথা বলেছি। পরে মনে হয় তারা সেখানে গিয়েছিল। যতটুকু জানতে পেরেছি তাদের মধ্যে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। বিভিন্নজন নানাভাবে কথা বলতেছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমরা যৌক্তিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি।
গত কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও ঢাবির কবি জসীম উদদীন হলের পদপ্রত্যাশী তানভীর হোসেন তুষার বলেন, আমরা কাউকে মারিনি। আলাউদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী রবিন নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে ১৩ লাখ টাকা পায়। আলাউদ্দিনের এক ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে বিষয়টি জানালে পল্লব নামে এক ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনকে মারধর করে। আমার সাথে রিয়াজ বিন ওহাব ছিলেন। আমরা অমর একুশে হলের কোণায় চা খেতে ছিলাম। ঘটনা শুনে আমরা সেখানে গেলে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে পল্লব। পরে সেখানে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।