ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে

অবরোধের প্রথম দিন ৬৬০, দশ দিনে ঢাকায় ১৮৮৪ গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ১২:২৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৫০ বার পড়া হয়েছে

জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীসহ সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল, রমনা ও বংশাল থানায় আরও তিনটি মামলা হয়েছে। এতে ঢাকায় মামলার সংখ্যা দাঁড়াল ৪০টি। এসব মামলায় নতুন করে ১৫৮ জনকে  ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ঢাকায় মোট ১ হাজার ৮৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার অবরোধ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৪৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের অপরাধ সংশ্লিষ্টতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অপরাধের প্রমাণ পেলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

সারাদেশে গ্রেপ্তার পাঁচ শতাধিক

বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিনে মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে নাশকতার অভিযোগে আট জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আটক হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের ১৬৯ জন।

চট্টগ্রামে সোমবার রাতে বাসে আগুনের ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। মঙ্গলবার গাড়ি ভাঙচুরের সময় আটক করা হয় বিএনপির ১৪ জনকে।

খুলনায় গত রোববার বিএনপির ২৮০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া মঙ্গলবার ডিবি পরিচয়ে খুলনায় ছাত্রদলের দুই নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেনি। অবরোধ চলাকালে খুলনায় আটক করা হয় বিএনপির ১০ জনকে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নাশকতার মামলায় বাগেরহাটে ২৫ জন, ময়মনসিংহে ৪৭, নোয়াখালীতে ৩০, মেহেরপুরে ১৪ ও ঝিনাইদহে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লাকেও মঙ্গলবার দুপুরে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহাসিন মুরাদ বলেন, ‘কোন মামলায় বাচ্চু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা পরে জানানো হবে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সোমবার রাতে হওয়া নাশকতার মামলায় যুবদল ও কৃষক দলের চারজন, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বিএনপি, যুবদল ও কৃষক দলের ১২ জন, রাঙামাটিতে দু’জনকে মঙ্গলভার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মঙ্গলবার মেহেরপুরে বিএনপি-যুবদলের ১৪ জনকে আটক করা হয়। গত শুক্রবার হওয়া নাশকতার মামলায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীসহ বিএনপির চার নেতা। গত বছরের নভেম্বরে শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীদের মারধরের মামলায় মঙ্গলবার নওগাঁর রানীনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ৬ নেতাকর্মীকে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিএনপি ও জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার নাশকতার মামলা হয়েছে। এছাড়া আগের রাতে বিএনপির আরো ২ কর্মীকে আটক করা হয়।

সুনামগঞ্জে গত সোমবার হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জেলা যুবদল সভাপতিসহ ১০ জন, বরগুনার তালতলীতে বিএনপির ৫ জন, রাজশাহীর বাঘায় বিএনপি জামায়াতের ৪ জন, বান্দরবানে বিএনপির ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার নাশকতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খুলনার দাকোপে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ৬ জন, নড়াইলে ১৪ জনকে। পুরনো নাশকতার মামলায় চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় গ্রেপ্তার হয়েছে শ্রমিকদলের দু’জন। যশোরে বিএনপির ১৪ জন, নাটোরে বিএনপি-জামায়াতের ৫ জন এবং ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জামায়াতের ৫ জন, হবিগঞ্জে বিএনপির ৩ জন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৩ জন, ঢাকার ধামরাইয়ে ৩ জন, মানিকগঞ্জে ৫ জন ও ফেনীর ছাগলনাইয়ায় এক শিবির নেতাকেকে আটক করা হয়েছে।

ঢাকায় আরও ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ১৫৮

রাজনৈতিক কর্মসুচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় সোমবার তাঁর থানায় বিএনপির ৬০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন ও দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ ৩০ আসামি এখনও পলাতক। তাদের গ্রেপ্তার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

বংশালে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাসচালক মো. রাকিব বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান সাত নেতাকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সূত্রাপুর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, থানা বিএনপির নেতা সঞ্জিত কুমার দেব ওরফে জনি দেব, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা বিল্লাল খান, মো. আক্তার, সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. রাজীব ওরফে রাজু খান ও মো. সজল।

এ ছাড়া সূত্রাপুর, কোতোয়ালি ও বংশাল থানার অনেক বিএনপি নেতাকর্মী অগ্নিসংযোগে জড়িত বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে

অবরোধের প্রথম দিন ৬৬০, দশ দিনে ঢাকায় ১৮৮৪ গ্রেপ্তার

আপডেট সময় ১২:২৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীসহ সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৬০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল, রমনা ও বংশাল থানায় আরও তিনটি মামলা হয়েছে। এতে ঢাকায় মামলার সংখ্যা দাঁড়াল ৪০টি। এসব মামলায় নতুন করে ১৫৮ জনকে  ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ঢাকায় মোট ১ হাজার ৮৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার অবরোধ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৪৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের অপরাধ সংশ্লিষ্টতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অপরাধের প্রমাণ পেলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

সারাদেশে গ্রেপ্তার পাঁচ শতাধিক

বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিনে মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে নাশকতার অভিযোগে আট জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আটক হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের ১৬৯ জন।

চট্টগ্রামে সোমবার রাতে বাসে আগুনের ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। মঙ্গলবার গাড়ি ভাঙচুরের সময় আটক করা হয় বিএনপির ১৪ জনকে।

খুলনায় গত রোববার বিএনপির ২৮০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া মঙ্গলবার ডিবি পরিচয়ে খুলনায় ছাত্রদলের দুই নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেনি। অবরোধ চলাকালে খুলনায় আটক করা হয় বিএনপির ১০ জনকে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নাশকতার মামলায় বাগেরহাটে ২৫ জন, ময়মনসিংহে ৪৭, নোয়াখালীতে ৩০, মেহেরপুরে ১৪ ও ঝিনাইদহে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লাকেও মঙ্গলবার দুপুরে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহাসিন মুরাদ বলেন, ‘কোন মামলায় বাচ্চু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা পরে জানানো হবে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সোমবার রাতে হওয়া নাশকতার মামলায় যুবদল ও কৃষক দলের চারজন, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বিএনপি, যুবদল ও কৃষক দলের ১২ জন, রাঙামাটিতে দু’জনকে মঙ্গলভার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মঙ্গলবার মেহেরপুরে বিএনপি-যুবদলের ১৪ জনকে আটক করা হয়। গত শুক্রবার হওয়া নাশকতার মামলায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীসহ বিএনপির চার নেতা। গত বছরের নভেম্বরে শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীদের মারধরের মামলায় মঙ্গলবার নওগাঁর রানীনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ৬ নেতাকর্মীকে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিএনপি ও জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার নাশকতার মামলা হয়েছে। এছাড়া আগের রাতে বিএনপির আরো ২ কর্মীকে আটক করা হয়।

সুনামগঞ্জে গত সোমবার হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জেলা যুবদল সভাপতিসহ ১০ জন, বরগুনার তালতলীতে বিএনপির ৫ জন, রাজশাহীর বাঘায় বিএনপি জামায়াতের ৪ জন, বান্দরবানে বিএনপির ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার নাশকতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খুলনার দাকোপে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ৬ জন, নড়াইলে ১৪ জনকে। পুরনো নাশকতার মামলায় চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় গ্রেপ্তার হয়েছে শ্রমিকদলের দু’জন। যশোরে বিএনপির ১৪ জন, নাটোরে বিএনপি-জামায়াতের ৫ জন এবং ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জামায়াতের ৫ জন, হবিগঞ্জে বিএনপির ৩ জন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ৩ জন, ঢাকার ধামরাইয়ে ৩ জন, মানিকগঞ্জে ৫ জন ও ফেনীর ছাগলনাইয়ায় এক শিবির নেতাকেকে আটক করা হয়েছে।

ঢাকায় আরও ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ১৫৮

রাজনৈতিক কর্মসুচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় সোমবার তাঁর থানায় বিএনপির ৬০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন ও দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ ৩০ আসামি এখনও পলাতক। তাদের গ্রেপ্তার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

বংশালে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাসচালক মো. রাকিব বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান সাত নেতাকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সূত্রাপুর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, থানা বিএনপির নেতা সঞ্জিত কুমার দেব ওরফে জনি দেব, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা বিল্লাল খান, মো. আক্তার, সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. রাজীব ওরফে রাজু খান ও মো. সজল।

এ ছাড়া সূত্রাপুর, কোতোয়ালি ও বংশাল থানার অনেক বিএনপি নেতাকর্মী অগ্নিসংযোগে জড়িত বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।