ঢাকা ০৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একজন শিক্ষার্থীও নেই স্কুলে, আড্ডা দিয়ে সময় কাটান শিক্ষকরা

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৪:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪
  • / ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

চাপারকোণা মনিজা আবুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

স্কুলে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। কিছু সময়ের জন্য স্কুলে আসেন তারা। গল্প আর আড্ডায় ঘণ্টা দুয়েক সময় কাটিয়ে চলে যান। শিক্ষক থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে অভাব শুধু শিক্ষার্থীর। কাগজ-কলমে স্কুলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখানো হলেও বাস্তবে নেই একজনও।

১৯৮৭ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ১৯৯৭ সালে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে ৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী থাকলেও নেই কোনো শিক্ষার্থী।

জামালপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোণা এলাকায় এমনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখা মিলেছে । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম চাপারকোণা মনিজা আবুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি কক্ষই শিক্ষার্থীশূন্য। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ধুলার আস্তরণ পড়ে গেছে। কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী স্কুল মাঠে বসে গল্প করছেন।

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকরা স্কুলে এসে আড্ডা দিয়ে চলে যান। শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। লেখাপড়া না হওয়ায় স্কুলটিতে কেউ ভর্তিও হতে চান না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম মানিক জানান, শিক্ষকরা যদি নিয়মিত স্কুলে না আসেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করায়; সেটি দেখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। কিন্তু এসব বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতেন না।

এ বিষয়ে চাপারকোণা মনিজা আবুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আজমেরী বেগম শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, শিক্ষার্থী শূন্য বিষয়টি ঠিক নয়, তবে উপস্থিতি কম।

সরিষাবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক জানান, প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশার বিষয়টি জানতেন না তিনি। শিক্ষার্থী না থাকলে এমপিও বাতিল করা হবে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, স্কুলের এমন বেহাল দশার বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন। তদন্তের মাধ্যমে বিদ্যালয় শিক্ষার্থী শূন্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসী বলছেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে যারা মেধা-শ্রম এবং জায়গা জমি দিয়েছে তাদের এসব কিছু জলে যাচ্ছে। এলাকায় নারী শিক্ষায় এই বালিকা বিদ্যালয় তো ভূমিকা রাখছেই না উল্টো নষ্ট হচ্ছে সরকারি অর্থ।

নিউজটি শেয়ার করুন

একজন শিক্ষার্থীও নেই স্কুলে, আড্ডা দিয়ে সময় কাটান শিক্ষকরা

আপডেট সময় ০৪:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

স্কুলে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। কিছু সময়ের জন্য স্কুলে আসেন তারা। গল্প আর আড্ডায় ঘণ্টা দুয়েক সময় কাটিয়ে চলে যান। শিক্ষক থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে অভাব শুধু শিক্ষার্থীর। কাগজ-কলমে স্কুলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখানো হলেও বাস্তবে নেই একজনও।

১৯৮৭ সালে এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব জমি ও অর্থায়নে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ১৯৯৭ সালে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে ৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী থাকলেও নেই কোনো শিক্ষার্থী।

জামালপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোণা এলাকায় এমনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখা মিলেছে । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম চাপারকোণা মনিজা আবুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি কক্ষই শিক্ষার্থীশূন্য। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ধুলার আস্তরণ পড়ে গেছে। কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী স্কুল মাঠে বসে গল্প করছেন।

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকরা স্কুলে এসে আড্ডা দিয়ে চলে যান। শিক্ষার্থী নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। লেখাপড়া না হওয়ায় স্কুলটিতে কেউ ভর্তিও হতে চান না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম মানিক জানান, শিক্ষকরা যদি নিয়মিত স্কুলে না আসেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করায়; সেটি দেখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। কিন্তু এসব বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতেন না।

এ বিষয়ে চাপারকোণা মনিজা আবুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আজমেরী বেগম শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, শিক্ষার্থী শূন্য বিষয়টি ঠিক নয়, তবে উপস্থিতি কম।

সরিষাবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক জানান, প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশার বিষয়টি জানতেন না তিনি। শিক্ষার্থী না থাকলে এমপিও বাতিল করা হবে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, স্কুলের এমন বেহাল দশার বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন। তদন্তের মাধ্যমে বিদ্যালয় শিক্ষার্থী শূন্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসী বলছেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে যারা মেধা-শ্রম এবং জায়গা জমি দিয়েছে তাদের এসব কিছু জলে যাচ্ছে। এলাকায় নারী শিক্ষায় এই বালিকা বিদ্যালয় তো ভূমিকা রাখছেই না উল্টো নষ্ট হচ্ছে সরকারি অর্থ।