ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আসছে
- আপডেট সময় ০৩:০২:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪
- / ২৪০ বার পড়া হয়েছে
বঙ্গপোসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বুধবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির আবহাওয়াবিদ এবং আবহাওয়াসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আর সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। যদিও ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। এবার যদি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, তবে এর নাম হবে ‘রেমাল’।
লঘুচাপের ঘোষণা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আজ ঘোষণা করা হয়েছে, দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এর কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। আজ এ ঘোষণা দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, লঘুচাপটি আজ বা আগামীকাল সকালের মধ্যেই সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। আগামী শুক্র বা শনিবার এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
এর আগে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টের (ইসিএমডব্লিউএফ) এক ঘোষণায় বলা হয়, আজ (বুধবার) বা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবনের কাছে ২৬ থেকে ২৭ মে আঘাত হারতে পারে। তবে ঘোষণায় এ কথাও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি সব সময় ঠিক থাকে না। এর গতিপথ এবং গতি পরিবর্তিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন
একটা সময় ছিল যখন ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কিংবা ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো নাম নেই। শুধু আমাদের দেশের নয়, অন্যান্য দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়েরও কোনো নাম থাকত না। তাই এসব ঝড়ের নাম রাখার একটি চল শুরু হয় একপর্যায়ে। কারণ, নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না। এর আঘাত হানার সময় বা তারিখ বের করে পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। আর এটি করে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। ডব্লিউএমও সে জন্য পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করেছে। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৮ সালের আরএমএসসি নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। এ সময় ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়। নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। বিশ্বের কোনো অঞ্চলের কোনো মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম রূঢ় হতে পারবে না। এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায়, এমন হতে হবে। সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকতে হবে ওই নামে। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এখানে উচ্চারণও দিয়ে দিতে হবে।
রেমাল শব্দের অর্থ কী
ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনসের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী নামের তালিকা হয়। যেমন ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী এই ১৩ দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগে থাকে বাংলাদেশের নাম। আর শেষে থাকে ইয়েমেনের নাম। এবার ‘রেমাল’ শব্দটি ওমান থেকে নেওয়া হয়েছে। এরপরই আসবে পাকিস্তানের নাম।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, রেমাল একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ ‘বালু’।