ঢাকা ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত সফরে গেলেই বলে দেশ বিক্রি করে দিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:-
  • আপডেট সময় ০৫:৩৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
  • / ১১৪ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনা

দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফর করছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এবারের চীন সফরে ২১টি সমঝোতা সই হয়েছে। যারা সফরের সমালোচনা করছেন, তারা কি জেনে-বুঝে এসব করছেন? নাকি শুধুই আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে? ভারত সফরের পর বলা হলো- দেশ বেচে দিয়েছি, এখন বলছে চীন কিছু দেয়নি। এগুলো যারা বলেন, তাদের মানসিক অসুস্থতা আছে। তাছাড়া, এভাবে এসব নিয়ে বানোয়াট প্রশ্ন তোলার কথা না।  
 
এ সময় সফর সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রচণ্ড জ্বরের কারণে পুতুল আমার সঙ্গে চীনে যেতে পারেনি। মাত্র ছয় ঘণ্টা আগে দেশে ফিরেছি বলে এত সমালোচনা-তোলপাড়। অফিসিয়াল কাজ শেষ হলে, সফরে গিয়ে শপিং বা ঘোরাঘুরি করি না। এবারই প্রথম না, এর আগেও অনেকবার এভাবে সফর শেষ করে চলে এসেছি বলে জানান তিনি।  
 
সমালোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ভারতের গণমাধ্যমে চীন সফর নিয়ে, নেতিবাচক সংবাদ হচ্ছে। সেটা নিয়ে বলার কিছু নাই। কিন্তু ভারতবিরোধীরা আবার তাদের গণমাধ্যমের সংবাদে ভর করেই সমালোচনা করছে। কিছু বলার নেই এ বিষয়ে।
 
উন্নয়নবিরোধীরা চোখ থাকতে অন্ধ ও কান থাকতে বধির উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাস করে না, তাদের কাছে আর কি আশা করা যায়?
 
এ সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার বিষয়ে চীন তাদের অঙ্গীকার পুনরায় ঘোষণা করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
 
প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক সফরে আমি গত ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করি। ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমি এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এরপর ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
 
সরকারপ্রধান বলেন, সম্মেলনে আমি চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই। এ সময় অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
 
তিনি জানান, এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বক্তব্য দেন এবং তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ১০টি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ১৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়।
 
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখান। একই সঙ্গে এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারত সফরে গেলেই বলে দেশ বিক্রি করে দিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৫:৩৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফর করছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এবারের চীন সফরে ২১টি সমঝোতা সই হয়েছে। যারা সফরের সমালোচনা করছেন, তারা কি জেনে-বুঝে এসব করছেন? নাকি শুধুই আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে? ভারত সফরের পর বলা হলো- দেশ বেচে দিয়েছি, এখন বলছে চীন কিছু দেয়নি। এগুলো যারা বলেন, তাদের মানসিক অসুস্থতা আছে। তাছাড়া, এভাবে এসব নিয়ে বানোয়াট প্রশ্ন তোলার কথা না।  
 
এ সময় সফর সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রচণ্ড জ্বরের কারণে পুতুল আমার সঙ্গে চীনে যেতে পারেনি। মাত্র ছয় ঘণ্টা আগে দেশে ফিরেছি বলে এত সমালোচনা-তোলপাড়। অফিসিয়াল কাজ শেষ হলে, সফরে গিয়ে শপিং বা ঘোরাঘুরি করি না। এবারই প্রথম না, এর আগেও অনেকবার এভাবে সফর শেষ করে চলে এসেছি বলে জানান তিনি।  
 
সমালোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ভারতের গণমাধ্যমে চীন সফর নিয়ে, নেতিবাচক সংবাদ হচ্ছে। সেটা নিয়ে বলার কিছু নাই। কিন্তু ভারতবিরোধীরা আবার তাদের গণমাধ্যমের সংবাদে ভর করেই সমালোচনা করছে। কিছু বলার নেই এ বিষয়ে।
 
উন্নয়নবিরোধীরা চোখ থাকতে অন্ধ ও কান থাকতে বধির উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাস করে না, তাদের কাছে আর কি আশা করা যায়?
 
এ সময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার বিষয়ে চীন তাদের অঙ্গীকার পুনরায় ঘোষণা করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
 
প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক সফরে আমি গত ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করি। ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমি এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এরপর ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
 
সরকারপ্রধান বলেন, সম্মেলনে আমি চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই। এ সময় অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
 
তিনি জানান, এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বক্তব্য দেন এবং তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ১০টি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ১৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়।
 
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখান। একই সঙ্গে এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।