ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২০ আগস্ট

- আপডেট সময় ০৮:২০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ৬২ বার পড়া হয়েছে
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ-জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২০ আগস্ট (বুধবার) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে মাঝে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালে আজ তিনজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল ও রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন।
জবানবন্দিতে তিনজনই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
জবানবন্দি শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সাইমুম রেজা তালুকদারসহ অন্যরা।
এখন পর্যন্ত এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ১২ জন। গত ১৭ আগস্ট চারজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। এর মধ্যে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন চৌধুরী মামুন।
এদিকে, সোমবার সকালেও এ মামলার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
এর আগে, গত ৬ আগস্ট তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য-জেরা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সেদিন দুজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে একজন রিনা মুর্মু ও আরেকজন একেএম মঈনুল হক।
গত ৪ আগস্ট এ মামলায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়। ওইদিন সাক্ষী দেন পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর চোখ হারানো পারভীন। তারা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিজেদের করুণ অবস্থার জন্য শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন। ৩ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এর আগে, ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।