নিজস্ব প্রতিবেদক

যশোরে স্থানীয় এক প্রবাসীর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাঙের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারী-শিশুসহ সাত জন আহত  হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) রাত ১০ টায় যশোর জেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মঠবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাড়ির পাশে একটা জায়গায় বাঁশ কাটা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদের জেরে প্রবাসী ফেরত জামাল মোড়লের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে একই গ্রামের একদল কিশোর গ্যাং। কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে ছিল ৯ নং ওয়ার্ড যুবদলের সেক্রেটারি মাহাবুবুর রহমান ওরফে ঘাউড়া মাহবুব (২০)। এছাড়া আরো ছিল ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিমেল ওরফে রুবেল (২০), পিচ্চি হৃদয় (২১), ধোলা রানা (২৭),শাহাবুর (১৭), শাওন (১৬), রনি, সাকিবসহ ঐ কিশোর গ্যাংয়ের ১২ থেকে ১৫ জন।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বাঁশ কাটার নিয়ে দুই পক্ষের ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার জের ধরে আনুমানিক রাত ১০টার দিকে অন্ধকারে ঘুমন্ত  প্রবাসফেরত জামাল মোড়লের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী, মেয়ে, ছোট ভাইয়ের বউ ও ছোটভাইসহ তাঁদের ৭জনের উপর ছুরি,হাতুড়ী, দেশী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা ও  হত্যার চেষ্টা করে এই কিশোর গ্যাং। জামালের মেয়েকে ধর্ষণ করার হুমকিসহ কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে উত্ত্যক্ত করে রিমেল,মাহাবুর ও রানা। এসময় উঠানে থাকা একটি হাইস গাড়ি ও ঘর-বাড়ী ভাংচুর এবং ২ জোড়া কানের দুল, ১টি গালার হার,১জোড়া হাতের রুলি ও নগদ ৪০ হাজার টাকা লুট করে। হামলার পর সবাইকে বাড়ীর মধ্যে জিম্মি করে রাখে।

এ ব্যাপারে হামলার শিকার জামাল মোড়লের জামাতা তুহিন বলেন, দুপুরে ঝগড়া বিবাদের পর রাতে সালিশ বসার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগেই তারা কিশোর গ্যাং নিয়ে আমাদের বাড়ির লোকজনের উপর হামলা চালায়। এমনকি আহতদের হাসপাতালে নিতে চাইলে আবার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। এই সন্ত্রাসী হামলার মুল হোতা রিমেল ওরফে রুবেল ভাই ও তার পিতা কুখ্যাত আওয়ালীগের সন্ত্রাসী শাহরুল এর ডান হাত শফি মোল্লা, সিরাজ আলী, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি শহিদুল মোল্লা ও শরিফুল। হামলার এক পর্যায় তারাও বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করে এবং জামাল ও তার ছোট ভাইকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ঘটনায় গ্রামে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে, জনমতে তৈরি হয়েছে ভয় ও শঙ্কা। খবর পাওয়া মাত্র কোতোয়ালি থানার পুলিশের এসআই জাহিদুল ইসলাম পুলিশের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আহতদের উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং পরবর্তী তদন্তের জন্য হামলার প্রমাণ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। বর্তমান আহতরা যশোর সদর থানায় চিকিৎসাধীন আছে। সারা রাত গ্রামে ডিবি মোতায়ন ছিল।