গুলিতে যুবকের মৃত্যু
আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ভোট গণনার নিয়ে সংঘর্ষ
- আপডেট সময় ১২:০০:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪
- / ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে উপনির্বাচনের সহিংসতায় প্রতিপক্ষের গুলিতে হৃদয় ভূঁইয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ সদস্যসহ আরো ২০জন আহত হয়েছেন।
পুনরায় ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হৃদয় ভূইয়া দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভূইয়ার ছেলে।
তিনি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্ধী কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মজিবুর রহমান মারা যাওয়ায় তাঁর পদ শূন্য হয়। আজ এ ওয়ার্ডে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট গ্রহণ শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান। এসময় ফলাফল জানার পর ওই কেন্দ্রের প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে পুনরায় ভোট গণনার অনুরোধ করেন। পুনরায় ভোট গণনা করে রাজুর পক্ষে এক ভোট যুক্ত হয়।
এ নিয়ে রাজুর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। রাজু প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গণনা করতে দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে রাজু কৌশলে কেন্দ্র হতে বের হয়ে বিষয়টি তাঁর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিলে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা লোকজনকে উপজেলায় আসতে বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুলিশ, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে হৃদয় ভূঁইয়া ও কামাল ভূঁইয়ার ছেলে ওমর ফারুক (২৭) গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও আপন, সাখোয়াত, মফিজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, রাশেদ ও রিপনসহ ১২জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে হৃদয় ভূঁইয়া মারা যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাইফুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খবিরউদ্দিন, কনস্টেবল মঞ্জু মিয়া, জুয়েল রানা, আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, নূর মোহাম্মদ, আল আমিন আহত হন। পুলিশ সদস্যদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের রাজু নির্বাচিত হয়। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন আজিজ সরকারকে জয়ী ঘোষণা করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুনরায় ভোট গণনা করে ফলাফল দেওয়ার অনুরোধ করলে আজিজ সরকার বহিরাগত লোকজন নিয়ে গুলি করে। এসময় পুলিশ ও রাজুর সমর্থকের ওপর গুলি চালায়।’
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন শেষে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এসময় আজিজ সরকারের সমর্থকদের গুলিতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের ৮ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।